নদী ড্রেজিংয়ে সচল ১৩৫ কিমি নৌপথ, সাশ্রয় ৩০০ কোটি

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩-৬-২০২৫ বিকাল ৫:৫১

64Views

‘৫৩টি নৌপথ ক্যাপিটাল ড্রেজিং (১ম পর্যায়ে ২৪টি নৌপথ)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে কংস ও ভোগাই-কংস নদীতে সুষ্ঠুভাবে ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিয়োজিত ৫টি প্রতিষ্ঠানের ৯টি ড্রেজার প্রায় তিন বছর কাজ করে ৭২,৯৭,০৯১.৭৫ ঘনমিটার মাটি ড্রেজ করে। এতে ব্যয় হয় ১,১২০৭.৮৯ লক্ষ টাকা। সরকারের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আধুনিক পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফিক জরিপের মাধ্যমে মাটির পরিমাণ নির্ধারণ করে।

সিইজিআইএস ইকোসাউন্ডার ও হাইপ্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করে সঠিকভাবে জরিপ পরিচালনা করে এবং সার্বক্ষণিকভাবে কাজ মনিটর করে। এ তথ্যের ভিত্তিতে বিআইডব্লিউটিএ প্রকৌশলীরা বিল যাচাই করে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠান, যা পরে নিরীক্ষা বিভাগ ও হিসাব বিভাগে পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়। ফলে কাজ না করে অতিরিক্ত বিল গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।

এই ড্রেজিং কার্যক্রমের ফলে ১৩৫ কিলোমিটার নৌপথ সচল হয়েছে, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৫৫টি হাটবাজার। পাশাপাশি, খননকৃত মাটি ব্যবহারে ২০২ বিঘা অকৃষি জমি কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। বিশেষ করে নেত্রকোনার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ ও সদর উপজেলায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি এসেছে।

এই প্রকল্পের টেন্ডারিং ই-জিপি পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। ৫টি লটে সর্বনিম্ন দরদাতাদেরকে কাজ দেওয়া হয়। দৈনিক নিউ এইজ (১৩-১১-২০১৮) ও দৈনিক যুগান্তর (১৪-১১-২০১৮) পত্রিকায় দরপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। ই-জিপি পদ্ধতিতে কারো প্রতি বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই।

ড্রেজিংয়ের মাটি ব্যবস্থাপনার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় একটি আট সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে, যার নেতৃত্বে ছিলেন জেলা প্রশাসক। এই কমিটির পরামর্শ অনুযায়ীই মাটি ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হয়।

এই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ ছাইদুর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে সরকারকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে দৈনিক সমকাল, জনকণ্ঠ, ইনকিলাব, অবজারভার, ডেইলি স্টারসহ প্রায় ৮০টি জাতীয় পত্রিকায় ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

তবে একটি কুচক্রী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থে বাধাগ্রস্ত হয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে ছাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে। তার আয়কর নথি ও পারিবারিক তথ্য বিকৃত করে কিছু পত্রিকায় বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়। অথচ অনুসন্ধানে দেখা যায়, দুদক বা অন্যান্য অনুসন্ধানী সংস্থা তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি।

সরকারের নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ, PPR-2008 অনুসারে, বিআইডব্লিউটিএ'র প্রতিটি কার্যক্রম প্রকৌশল সদস্য, চেয়ারম্যান ও কর্তৃপক্ষের যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এখানে এককভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই।

নদী ড্রেজিং কার্যক্রমের এই সফল বাস্তবায়ন একদিকে যেমন নৌপরিবহন ব্যবস্থায় নতুন গতি এনেছে, অন্যদিকে সরকারি অর্থের সাশ্রয়ের দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে।


আরও পড়ুন