হতদরিদ্র বাবা-মায়ের আকুতি অসুস্থ সন্তানকে বাঁচাতে
প্রকাশিত: ২০-৫-২০২৫ বিকাল ৫:৪৮
অসুস্থ মেধাবী মুকুল চন্দ্র রায় । গত দশ মাধ ধরে প্যানক্রিয়াস সহ লিভারে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না।
হতদরিদ্র পরিবারের বাবা-মা সন্তানের অসুস্থতায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তারা বিত্তবান সহ সরকারের কাছে তার চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছে। লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন অধ্যাপক, চেয়ারম্যান প্রসেসর এ.এস.এম.এ.রায়হানের কাছে চিকিৎসা নিতে গেলেও অর্থের অভাবে সঠিকভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারেনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মুকুলের উন্নত চিকিৎসা করা খুবই জরুরি। উন্নত চিকিৎসা দেশে কিংবা বিদেশে চিকিৎসা করালেই সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তার চিকিৎসার জন্য ৭ থেকে ৮লক্ষ টাকা দরকার। কিন্তু দরিদ্র বাবা –মায়ের পক্ষে তা সম্ভব নয়। কয়েক মাসে রংপুরে চিকিৎসা করাতেই দুই লক্ষাধিক বেশী টাকা খরচ হয়েছে। এতে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিষামত শিমুলবাড়ী গ্রামে মেধাবী মুকুল চন্দ্রের বাড়ি। জরাজীর্ণ একটি ঘরে শুয়ে বসে দিন পার করে। দিনের বেলা বাবা-মা দিন মজুরির কাজ করে। মুকুল জানায় বাবা ও মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইংরেজি বিভাগে মাষ্টার্স শেষ করি। তার পর ঢাকায় বেসকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরিও করি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। কিন্ত ভাইবাতে পাশ করতে পারিনি। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আমি প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হই। কিন্তু আমার জ্বর ভালো হ্িচছল না। এর পর রংপুরে বিশেষঙ্গ ডাক্তার দেখাই। তখনি ধরা পড়ে প্যানক্রিয়াস রোগ । এই রোগের চিকিৎসা করাতে ডাক্তার বলেছে কমপক্ষে ৭ লাখ টাকা লাগবে। এতোগুলো টাকা আমার বাবার পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সুস্থ হবো কি না জানি না। আমাদের নেই কোন জমি জামা। এভাবে বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মুকুল।
মুকুলের মা মোহনী বালা জানান, ঘরে এক টাকাও নেই। যে কয়টাকা ছিল সব খরচ হয়ে গেছে তার চিকিৎসায়। এখন আর পারছি না। ধারদেনাও হয়েছে। চোখের সামনে অসুস্থ ছেলেকে দেখলে কান্না চলে আসে। আমি আমার ছেলেটিকে বাঁচাতে চাই। যদি কেউ আমার এই অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করেন তার কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।
মুকুলের বাবা শুশীল চন্দ্র রায় জানান, চোখের সামনে ছেলেটার কষ্ট আর সইতে পারছি না। ১০ মাস ধরে সন্তানের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব। এখন টাকার অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
কিষামত শিমুলবাড়ী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম বলেন, অনেক কষ্ট করে একমাত্র সন্তানকে খেয়ে না খেয়ে মানুষ করেছেন। ভাগ্যের কি নিমর্ম পরিহাস একমাত্র সন্তান বাবা-মায়ের সামনে মৃত্যু যন্ত্রণায় প্রহর গুনছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, এই মুহূর্তে তাকে সহযোগিতা করার মতো বরাদ্দ নেই। ওই পরিবারের পক্ষ থেকে অসুস্থ শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্যসহ একটি আবেদন করার পরামর্শ দেন।