চৌগাছায় আপন মামা কর্তৃক ভাগ্নি ধর্ষনের চেষ্টা, ভুক্তভোগী নারির মায়ের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশিত: ৩-৫-২০২৫ দুপুর ১:৩০
যশোরের চৌগাছায় নিজ মামা কর্তৃক ভাগ্নি ধর্ষনের চেষ্টা, অতঃপর থানায় মামলার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে গভীর চক্রান্ত শুরু করেছে আসামি পক্ষের লোকজন। শুক্রবার নিজ বাড়ির আঙিনায় জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডেকে এমন অভিযোগ করেন আসামীর ছোট বোন ও ভুক্তভোগী ওই নারীর মা আসমা খাতুন। নিজ ভাইকে নারীলোভী উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে শুধু মেয়েদের জীবন নষ্ট করেছে এমনটি না, আমার বৃদ্ধ মাকে নিজ বাড়িতে হত্যা করে চব্বিশ ঘন্টা পর মারা যাওয়ার খবর প্রকাশ করে। আমি মায়ের মরাদেহ তুলে ময়না তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে যৌন নির্যাতনের শিকার নারীর মা আসমা খাতুন বলেন, গত মাসের ২৭ তারিখ আমার মেয়ে এক সন্তানের জননী তার আপন মামা এবং আমার ভাই পুড়াপাড়া বাজারের বাসিন্দা আলি আহম্মদের বাসাতে বেড়াতে যায়। ২৮ তারিখ দিবাগত রাতে আলি আহম্মদ আমার মেয়েকে ঘরের মধ্যে ডেকে পা টিপে দিতে বলে। সরল মনে মেয়ে তার মামার পা টিপে দিতে থাকে। একপর্যায়ে আকস্মিক ভাবে সে আমার মেয়েকে ঝাপটে ধরে এবং ধর্ষনের চেষ্টা করে। মেয়ে চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। খবরটি দ্রুতই মহল্লায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা আমার ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমি খবর পেয়ে দ্রুত ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের সহযোগীতা চাই। চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন দ্রুত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পুড়াপাড়ায় আমার ভাইয়ের বাসার সামনে হাজির হন। এরই মধ্যে মহল্লার উত্তেজিত জনতা তার বাসার বিভিন্ন গ্লাস ভাঙচুর করার পাশাপাশি লম্পট ভাই আলি আহম্মদকে আটক করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং আলি আহম্মদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ওই রাতেই আমি বাদি হয়ে ভাইকে আসামি করে থানায় মামলা করি এবং পুলিশ আটক আসামীকে জেলহাজতে প্রেরণ করে। দুই দিন পরে আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনা বেগম, মেয়ে আফরিনা খাতুন, মেয়ের জামা সৈনিক পদে চাকুরীরত শিহাব উদ্দিন এবং তার পোষ্য সাঙ্গপাঙ্গরা ধর্ষন চেষ্টার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে গভীর চক্রান্ত শুরু করে। আমার বোন ও বোন জামাই রবিউল ইসলাম আসামীর বাড়ি ভাঙচুর করেছে এমন অভিযোগ তুলে আমাদের নামে মামলা করার হুমকি এমনকি প্রাণনাশেরও হুমকি দিচ্ছে। আমি বর্তমানে পাশবিক নির্যাতনের শিকার মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনাতর মধ্যে বসবাস করছি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়ের কোন ছেলে বন্ধু নেই, যা আছে সবই মেয়ে বন্ধু। প্রায় দিনই সে বিভিন্ন এলাকা হতে মেয়ে এনে বাসাতে রাখে আর এই অনৈতিক কাজে তার স্ত্রী রেহেনা খাতুন সহযোগীতা করে। সম্প্রতি পুড়াপাড়া এলাকার এক স্কুল শিক্ষিকার বাসাতে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ধরা পড়ে এবং দেড় লাখ টাকা দিয়ে রক্ষা পাই। তার এহেন কর্মকান্ডের কারনে স্থানীয়রা অনেকটাই ভাইকে এক ঘোরে করে রেখেছে, সে মহল্লার মসজিদে পর্যন্ত নামাজ পড়তে যাই না।
লিখিত বক্তব্যে আসমা খাতুন বলেন, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের ২৬ তারিখে আমার মা মারা যায়। আমি খবর পেয়ে চৌগাছা হতে দ্রুত পুড়াপাড়া বাজারে ভাই আলি আহম্মদের বাসাতে আসি। এ সময় শুনতে পাই মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমার মা আত্মহত্যা করতে পারেনা, কারন মায়ের এমন কোন কিছুই ছিলো না যে মা আত্মহত্যা করবে। পরে জানতে পারি, মা মারা গেছে রাত দশটায় ওই রাতে ভাই কৌশলে মায়ের লাশ কবর দিতে যাই, যা আমরা কিছুই জানিনা। এ বিষয় ভাইয়ের কাছে জানতে গেলে সে আমার পা জড়িয়ে ধরে বলে তুই আমার ছোট বোন আমাকে রক্ষা কর, তানা হলে আমি শেষ হয়ে যাবো। ভাইয়ের কাকুতি মিনতির কারনে আমি কোন পদক্ষেপ নেয়নি, কিন্তু এখন সে আমার কলিজায় হাত দিয়েছে আমি তার বিচার চাই। সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তুক্ষেপ কামনা করছি, প্রশাসন যেন আমার মায়ের লাশ কবর হতে তুলে ময়না তদন্ত করে মৃত্যু রহস্য উন্মোচন করে। সেই সময়ে কোন ময়না তদন্ত হয়নি তাই আমি প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনের এ সময় পাশবিক নির্যাতনের শিকার ওই নারী, তার ফুপাজি রবিউল ইসলাম, গ্রামবাসি ইদ্রিস আলী, আঃ জলিল, মতিয়ার রহমান, মনা বিশ্বাস, আঃ রাজ্জাক, সেলিম রেজা, আঃ আলিম, মন্টু, ইউনুচ আলী, জহির উদ্দিন, রাসেল হোসেন, জসিম উদ্দিন, আমিনুর রহমান, সবুজ হোসেনসহ মহল্লার একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলী আহম্মদের স্ত্রী রেহেনা খাতুন, মেয়ে আফরিনা খাতুন ও মেয়ের জামাই শিহাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তারা বলেন, আসমা খাতুনের সাথে আমাদের জায়গা জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে মুলত এই কারনে তারা আমাদেরকে ফাসানোর চেষ্টা করছে।