বেনাপোলে হাকর-নদী খনন কাজ বন্ধ ভোগান্তীতে এলাকাবাসী
প্রকাশিত: ২৭-৪-২০২৫ দুপুর ১:২৮
যশোরের বেনাপোল পৌরসভার হাকর-নদীতে অবৈধ দখলদারদের হস্তক্ষেপে খনন কাজে আদালতের নিষেধাজ্ঞার মুখে বন্ধ হয়ে পড়ে দীর্ঘ ৬৮ বৎসর পর শুরু হওয়া সাদিপুর চেকপোস্ট হতে নারায়নপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার হাকর-নদী খনন ও ড্রেজিংয়ের কাজ। সীমান্ত ঘেষা বেনাপোল জনপদের জলাবদ্ধতা নিরসনে ভারতের ইসামতি নদীর সাথে সংযুক্ত বেনাপোলের একমাত্র হাকর নদীটির অবৈধ দখলদার মুক্ত করে পানির প্রবাহ সচল রাখতে পুনঃখনন কাজ শুরুর দাবী জানিয়েছে বেনাপোল পৌর এলাকার সচেতন মহল।
এলাকাবাসীর পক্ষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেনাপোলের প্রধান উপদেষ্টা ও বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন,ভারী বর্ষনে বেনাপোল পৌর এলাকার নিচু গ্রাম গুলো পানিতে তলিয়ে জনদূর্ভোগ সৃষ্টিসহ স্থলবন্দর এলাকা পানিতে তলিয়ে বন্দরের পণ্যগারে রাখা কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়। তাই পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ও পানির প্রবাহ সচল রাখতে বেনাপোলে শুরু হওয়া হাকর নদী খনন কাজ পুনরায় চালু হওয়া জরুরী। বিগত ২৪ সালের জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবাধনে ভারত সীমান্ত ঘেষা যশোরের বেনাপোল জনপদের পানির প্রবাহ সচল রাখতে সাদিপুর চেকপোস্ট হতে নারায়নপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার হাকর নদী খনন ও ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়।
তৎকালীন পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান (বদলী)জানান, প্রাথমিক ভাবে পাঁচ কিলোমিটার খনন করা হলেও পরবর্তীতে ভারতের ইসামতি নদীর সাথে সংযুক্ত প্রবাহমান হাকরটির দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার ধাপে ধাপে খনন করা হবে। দীর্ঘ ৫কিলো মিটার নদী খনন কাজের প্রকল্প ব্যায় নির্ধারন করা হয়েছে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার ৯৪ টাকা এবং প্রকল্পটির খনন কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চট্রগ্রামের ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স বলে জানা গেছে। খনন কাজ শুরুর প্রথম থেকেই হাকর-নদীতে অবৈধ্য স্থানীয় প্রবাবশালী দখলদ্বারদের বাঁধায় খনন কাজ বন্ধ হয়ে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপে আইনী লড়াই শেষে কয়েক মাস পর খনন কাজ আবারো শুরু হয়ে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার খনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
বেনাপোল পৌরসভার ৩নং ওয়াডের বাসিন্দা ডা.শাহাজালাল খান মন্টু বলেন, ২০২৩ সালে ৯ জানুয়ারী বেনাপোলে হাকর-নদী খনন কাজ শুরু হলে এতে বেনাপোলবাসী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রভাবশালী দখলদারদের কারনে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে এই প্রকল্প। বর্তমান খনন অংশে কচুরিপানায় ভরে গেছে এবং ব্যাপকহারে মশা বিস্তার করেছে। এই হাকর-নদী বাস্তবায়না না হলে বেনাপোল পৌরএলাকা ভবহদে পরিনত হবে। প্রতি বছর পানি নিস্কাসনের অভাবে কোটি কোটি টাকার পণ্য ভিজে নষ্ট হচ্ছে বন্দরে। দ্রুত এই হাকর-নদী প্রকল্প বাস্তবায়ন চাই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান,প্রকল্পের মেয়াদ শেষ ও বাতিল হওয়ায় বেনাপোলের হাকর-নদী খনন বন্ধ রয়েছে। খনন প্রক্রিয়া অসম্পন্ন প্রশ্নে জানান,স্থানীয় অবৈধ্য দখলদ্বারা হাইকোর্টে রিট করে নিষেধাঙ্গা নেওয়ায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না করতে পারায় যতটুকু কাজ করেছে ততটুকুর বিল উত্তোলন করেছে। স্থানীয়দের পুনরায় হাকর নদী খননের দাবীর প্রশ্নে তিনি জানান,এবিষয়ে নতুন ভাবে আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন প্রকল্পের আওতায় খনন কাজ পুনরায় শুরু করা যেতে পারে।
শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ কাজী নাজিব হাসান বলেন, ইতিমধ্যে বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জেলা পরিষদের মিটিং এ জেলা নদী রক্ষা কমিটিতে বিষয়টি উপস্থাপন করবো ও পরবর্তীতে গণমাধ্যমকে জানাবো। জনস্বার্থে হাকর নদী খননের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে অবৈধ্য দখলদার উচ্ছেদ পূর্বক খনন কাজ পুনরায় শুরু করতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাটির জনগন।