প্রাপ্ত বয়সে ছেলে-মেয়ে পালিয়ে বিয়ে করে ছেলে কারাগারে
প্রকাশিত: ২১-২-২০২৫ বিকাল ৭:৩৬
রাজধানী ডেমরা থানা এলাকায় সাং ৯৭/৩ আফসার উদ্দিন রোড,পাড়া ডগাইর বাসিন্দা মৃত বাকাউল্লাহর ছেলে এম এ বাছেদ বাবু (৩৭) দীর্ঘ ০৭ (সাত) মাসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ঢাকা নিউমার্কেট থানা এলাকায় স্টাফ কোয়ার্টার ব্লক/এ, বাসা নং ১০৮,মোঃ আলমগীর হোসেন এর কন্যা নওশাদ জাহান মিম (২২) এর সাথে। পরবর্তীতে গত ২৫/০১/২০২৫ ইং তারিখে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লালবাগ ২৮ নং ওয়ার্ড,কাজী মোঃ হাফিজুর রহমান এর অফিসে ছেলে - মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এ বিষয়ে লালবাগ ২৮ নং ওয়ার্ডের কাজী মোঃ হাফিজুর রহমান দৈনিক সকালের সময়কে বলেন গত- ২৫/০১/২০২৫ ইং তারিখে আমাকে ফোন করে বিকাল আনুমানিক ৪;টা থেকে ৫;টার মধ্যে ছেলে - মেয়ে উভয়ে স্বাক্ষীসহ আমার অফিসে উপস্থিত হন। আমার সহকারী মাওঃ হাবিবুর রহমান উভয়ের স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে এবং তাদের সম্মতিতে বিবাহ সম্পন্ন করান।নওশাদ জাহান মিম'কে তাহার পরিবারের সদস্যদের কথা জিজ্ঞাসাবাদ করায় মিম জানান যে, আমার পরিপুর্ন বয়স হয়েছে সুতরাং আমার দায়িত্ব পালনে আমি নিজেই সক্ষম।কাজী আরো জানান আমার সহকারী বলেন ছেলে - মেয়ে'র উপস্থিতি দেখে বুঝতে পারলাম যে তারা উভয়ে খুব আনন্দিত, সেহেতু জোরপূর্বক বিয়ে হয়েছে বলে ধারণা করছেন তাহা সম্পুর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায় ডেমরা থানা এলাকায় সাং ৯৭/৩ আফসার উদ্দিন রোড,পাড়া ডগাইর বাসিন্দা মৃত বাকাউল্লাহর ছেলে এম এ বাছেদ বাবুর নিজ বাসায় বিবাহের ২১ দিন পর গত ১৭/০২/২০২৫ ইং তারিখ নিউমার্কেট থানার পুলিশ এসে এম এ বাছেদ বাবু এবং তাহার স্ত্রী নওশাদ জাহান মিম'কে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬;টার দিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এবং পুলিশ কর্মকর্তা এম এ বাছেদ বাবুর বাসার অন্যান্য সদস্যদের কাছে বলে যায় আমরা নিউমার্কেট থানা থেকে এসেছি আপনারা নিউমার্কেট থানায় যোগাযোগ করেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় নিউমার্কেট থানার মামলা নং ০৮,তাং ১৭/০২/২০২৫খ্রি,ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন -২০০০(সাং/২০২০)এর ৭/৮/৩০ মামলা হয়।
এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহসিন মুঠোফোনে বলেন মামলার বিষয়ে আমি জানি বাদীর দাবি অনুযায়ী মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন আমরা আদালতে জমা দিবো।
মামলার বাদী মোঃ আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে দৈনিক সকালের সময়কে বলেন মেয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ঐদিন রাত ১১;টা থেকে ১২;টা পর্যন্ত আমি আমার স্ত্রী,আমার এক মেয়ে,শালা সহ মোট পাঁচজন ডেমরা ঐ বাড়ীতে অবস্থান করি এবং আমি থানায় কোন জিডি বা অভিযোগ করিনি। এরপর কয়েকবার গিয়েছি কিন্তু ছেলেপক্ষ আমাদের কোন কাবিননামা দেখাতে পারে নাই। পরবর্তীতে বাদী মোঃ আলমগীর হোসেন আরও বলেন যে আমার মেয়েকে ওরা বাসায় রেখে মেরেছে যার জন্য আমার মেয়ে খুব অসুস্থ তাকে নিয়ে আমি মেডিকেলে চিকিৎসা করাচ্ছি আপনি আমার ছোট মেয়ের সাথে কথা বলেন তখন মিম এর ছোট বোন তাহার পিতার কাছ থেকে ফোন নিয়ে বলে আমার বোনের সাথে বাছেদ বাবুর বিয়ে হতেই পারে তবে বিয়ার পর ছেলের বড় বোন আমার বোনের গায়ে হাত তোলার কারনে আমার পিতা থানায় অভিযোগ করেছেন পুলিশ গিয়ে আমার বোনকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে দিয়েছে এবং ঐ ছেলেকে কারাগারে পাঠিয়েছে, এখন এটা নিউমার্কেট থানার (ওসি) মহসিন এর কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মামলার এজাহারে আসামি পাওয়া যায় মোট পাঁচজন - ১। এম এ বাছেদ বাবু (৩৭) ২। জেরিন (৩৫) ৩। বিথী (৩২) ৪। শরীফ (৪০) ৫। সুলতান (৩৩)
এ বিষয়ে মামলার ৩ নং আসামী বিথী (৩২) দৈনিক সকালের সময়কে জানান গত - ২৫/০১/২০২৫ ইং তারিখে আমার ভাই এম এ বাছেদ বাবু মুঠোফোনে আমাকে বলেন জরুরী লালবাগ আসতে, আমি আমার চাচাতো ভাই সুলতান,বড় বোন জেরিন ও প্রতিবেশী মোঃ সাইফুল সহ আমরা লালবাগ গিয়ে ভাইয়ের সাথে দেখা করার পর ভাই তাহার প্রেমিকা নওশাদ জাহান মিম সহ মোট -(ছয়) জন একসাথে কাজী অফিসে যাই এবং ভাই আমাদেরকে বিস্তারিত জানান।আমরা সম্পূর্ণ ঘটনা জানার পর বিবাহে বাধাপ্রধান করি কিন্তু ভাই এবং তাহার প্রেমিকা নওশাদ জাহান মিম আমাদেরকে অনেক অনুরোধ করেন তাদের বিবাহ সম্পন্ন করে দেয়ার জন্য।পরবর্তীতে আমরা উপস্থিত থেকে ভাইয়ের বিবাহ সম্পন্ন করে বাসায় নিয়ে আসি। এবং তাহারা খুব ভালোভাবেই সংসার করে আসছেন। পরবর্তীতে আমার ভাবী আমাদের পৈতৃক বাড়ীর একটি ফ্ল্যাট দাবী করেন,আমরা অন্যান্য ভাই-বোন মা'কে বুঝিয়ে ভাই-ভাবীর সূখের জন্য একটি আলাদা ফ্ল্যাট থাকার জন্য দেয়া হয়। পরবর্তীতে হঠাৎ ১৭/০২/২০২৫ ইং তারিখে নিউমার্কেট থানার পুলিশ এসে আমার ভাই ও ভাবিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং ভাই সহ আমাদের মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হয়।ভাই কারাগারে আছেন এবং ভাবী তাহার বাবার কাছে আছেন ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কারণে আমরা বাড়ী ছাড়া।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে এই মিথ্যা এবং হয়রানিমুলক মামলার সঠিক বিচার দাবি করছি।