স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হলেও হয়নি পাকা রাস্তা, অপেক্ষা পরিণত হয়েছে আক্ষেপে
প্রকাশিত: ১৪-১০-২০২৪ বিকাল ৫:১৫
পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মুচির পুল বাজার ব্রিজ থেকে শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক ও বসাক বাজার মহাসড়কের সংযোগ সড়ক (Road code 578955366, 578955269) পর্যন্ত অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ মাটির কাঁচা রাস্তাটি স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হয়েও এখন পর্যন্ত পাকাকরণ হয়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাসহ কালিকাপুর ইউনিয়নের জনসাধারণের।
সরেজমিন দেখা যায়, মুচির পুল বাজার ব্রিজের দক্ষিণ পাশ দিয়ে শুক্রবারের হাট হয়ে আবদুল স্টান ও শুক্রবারের হাটের পশ্চিম পাশে হাজী করিম রাইচ মিলের সামনে দিয়ে জবান গাজী বাড়ি (শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়ক) পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তসহ চুঙ্গা ভেঙে খালে বাঁধ সৃষ্টি হয়েছে। জোয়ারের পানি রাস্তার উপর দিয়ে গড়িয়ে ফসলের মাঠ ডুবে যায় ও বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে। সাম্প্রতিক কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটুর উপরে পানি উঠে গেছে।
গত ৮-৯ বছর আগে জবান গাজী বাড়ি থেকে মৃধা বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার রাস্তায় ইটের সলিং হয়েছিল। তাও মেরামত, সংস্কার ও সম্প্রসারণের অভাবে ভেঙে গেছে এবং মাঝে মাঝে পানির গর্ত হয়ে গেছে। জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করে। এরমধ্যে তিন ইউনিয়নের শিক্ষার্থীরা এই পথ হয়েই শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে।
এছাড়াও রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে মুচির পুল বাজার থেকে আবদুল স্টান হয়ে বসাক বাজার হয়ে পটুয়াখালী চৌরাস্তা, শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিপরীত দিকে মুচির পুল হয়ে ২নং বাঁধঘাট এবং মুচির পুল হয়ে বাদুরা বাজার যাতায়াতে সুবিধা হবে। এককথায় মহাসড়কের সঙ্গে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম হতে পারে।
জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা নিয়ে শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শারিকখালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, বসাক বাজার ব্যতীত ইসলামিয়া হোসাইনিয়া ময়দান মাদ্রাসা, বড় আউলিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শারিকখালী নূরানী তা'লীমুল কুরআন মাদ্রাসাসহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী সরকারি কলেজের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের রাস্তাটি একমাত্র ভরসা। রাস্তাটি পাকাকরণ করা হলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের উপকার হবে। তাই জরুরিভিত্তিতে রাস্তাটি পাকা করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় ৮০ বছর বয়স্ক নাম প্রকাশ না করা এক ব্যক্তি বলেন, ইউনিয়নের মধ্যে ১নং ওয়ার্ড সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। ইচ্ছে করেই চেয়ারম্যান উত্তর আউলিয়াপুরের মানুষের সাথে এমন করছেন। সাবেক চেয়ারম্যানেরর বাড়ি এই রাস্তায়, তাই আমাদের কোনো উন্নতি নেই।
এ বিষয়ে হানিফ মৃধা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এক যুগেও একটু করে মাটি দেয়া হয়নি। উন্নয়ন বঞ্চিত এ রাস্তা পাকাকরণ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন এলে প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর পাকা করার উদ্যোগ নেয়া হয় না।
দিন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, জন্মের পর রাস্তাটিতে মাটি দিতে দেখিনি। মেরামত, সংস্কার ও পাকা তো পরের কথা। মেম্বার-চেয়ারম্যানের বাড়ির ধারের লোক হইনি দেখে আমাদের রাস্তা হয় না। একটু বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যায়। স্কুল-কলেজে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে না।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসেন আলী বলেন, এ সংক্রান্ত সমস্যার কথা এখন পর্যন্ত স্থানীয় কোনো জনপ্রতিনিধি আমাদের জানাননি। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারপরও আমাদের কাছে স্থানীয়রা আবেদন করলে রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার চেষ্টা করব। এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।