টাঙ্গাইলের লাল শাপলা বিলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমীরা

news paper

রাশেদ খান মেনন, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০-৯-২০২৪ দুপুর ৩:৩৭

298Views

টাঙ্গাইলের বাসাইলে বিলের শত একর জমিতে ফুটে থাকা লাল শাপলা মুগ্ধ করছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। শাপলা বিল যেন অন্যরকম এক অনুভূতি। টাঙ্গাইল জেলার বাসাইলে কলেজের সামনে এই শাপলা বিলের অবস্থান। এই বিলের লাল শাপলা দেখতে বেড়েছে দর্শনার্থীর আগমন। লাল শাপলা পেয়ে আনন্দে আত্মহারা দর্শনার্থীরা। একে অপরকে বলছেন- চলেন ঘুরে আসি। ছবি তুলতে যাচ্ছেন না কেন?
 
বাসাইল পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার এই বিল খ্যাতি পেয়েছে লাল শাপলার বিল নামে। রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের সূর্য ওঠার আগেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন নানা প্রান্তের প্রকৃতিপ্রেমীরা। সাথে বাড়তি আকর্ষণ বিলের পাড়ে বিচ্ছিন্নভাবে ডানা মেলা কাঁশফুল। ফুটে থাকা কাঁশফুল জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষা শেষে শরতের আগমণ। তবুও বর্ষার স্নিগ্ধতার রেশ এখনো রযেছে প্রকৃতিতে। খাল-বিলের থই থই জলে ফুটে থাকে শাপলা ফুলে। তেমনই এক শরতের সকালে শুভ্র নীল আকাশ আর হালকা কুয়াশার চাদরে মোড়া ধরণীতে সবেমাত্র উঁকি দিচ্ছে কুসুম সূর্য। সেই সূর্য শাপলার সবুজ পাতা আর লাল পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরে ধরা দিয়েছে চিকিমিকি মুক্তা হয়ে। সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে বিলের ধারে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
 
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিন ভোরে দূর-দূরান্ত থেকে শত শত প্রকৃতিপ্রেমী ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন বাসাইল পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার এই বিলে। রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের আলো ফুটতেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ। কেউ কেউ কাদা মাড়িয়ে শাপলা তুলে খোঁপায় গুঁজছেন আবার কেউ শাপলা তুলে ছবি তুলছেন। এ যেন লাল শাপলা ফুলের মেলা।
 
কেবল সৌন্দর্য উপভোগই নয়, এই লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এখান থেকে প্রতিদিন আহরণ করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শালুক। তবে বিলে নৌকা না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
 
দর্শনার্থী মিথিলা বলেন, আমি মির্জাপুর থেকে এখানে লাল শাপলা দেখতে এসেছি। দেখে অনেক ভালো লাগল। তবে বিলে নৌকা থাকলে ভালো হতো। কাদামাটি মাড়িয়ে শাপলা বিলে যেতে হয়। শিক্ষার্থী সুলতান বলেন, আমি এখানে প্রথম এসেছি। বিলের শাপলা দেখে আমি মুগ্ধ। বিলের মাঝখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা ভালো হলে আরো দর্শনার্থীরা আসবে।
 
ঘুরতে আসা শ্রাবণী বলেন, আগে এখানে তেমন মানুষ আসত না। এখন লাল শাপলার কথা শুনে অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন। বিনোদনের একটা জায়গা হয়েছে। সবাই তাদের ইচ্ছামতো ছবি তুলছে। তিনি আরো বলেন, আগামী মৌসুমে নৌকাসহ পর্যটন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা গেলে এই শাপলা বিলকে কেন্দ্র তৈরি হতে পারে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ।
 
কলেজ পড়ুয়া তানিয়া বলেন, এত লাল শাপলা আমি কখনো দেখিনি। আমি বান্ধবীদের সাথে এসেছি। হাজার হাজার লাল শাপলা ফুটেছে। প্রকৃতি যেন অন্যরকম সাজে সেজেছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। কাদা মাড়িয়ে ছবি তুলতে যেতে হয়। এখানে নৌকার ব্যবস্থা থাকলে আরো দর্শনার্থীর ভিড় হবে।
 
ঘুরতে আসা সিহাব বলেন, বউকে সাথে নিয়ে লাল শাপলা দেখতে এসেছি। অনেক দিন ধরে ইচ্ছা ছিল লাল শাপলার সাথে ছবি তুলব। আজ ইচ্ছাটার পূর্ণতা দিলাম। ভোরবেলায় লাল শাপলাগুলো মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকে, দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। লাল শাপলার রাজত্ব মনকে প্রফুল্ল করে তুলেছে।

আরও পড়ুন