কেরানীগঞ্জে চুরির অভিযোগের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন : আটক ২
প্রকাশিত: ৪-৮-২০২১ রাত ৮:৩৮
ঢাকার কেরানীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চুরির অভিযোগে একটি জিআই তার তৈরির কারখানায় ৪ শিশুর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১০-এর সিপিসি-২। এ ঘটনায় কারখানা মালিক মো. মালেক ও তার বড় ছেলে রাজু আহমেদকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার (৪ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার আগানগর কেচি শাহ ডক এলাকার রাইফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের কারখানা থেকে ওই ৪ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। নির্যাতিত শিশুরা হলো- ইয়াসিন (১৩), মো. রানা (১১) , হাসিব (১২) এবং ওহিদ (১৫)।
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) রাতে ওই চার শিশু উল্লিখিত কারখানা থেকে ২-৩ কেজি পরিত্যক্ত জিআই তার নিয়ে যায়। বিষয়টি কারখানা মালিকের ছেলে মো. রাজিব জানতে পারলে তাদের ধরে এনে কারখানায় আটকে কারখানার কর্মচারীদের সহায়তায় মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন করে। নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হয়নি সে, পরে শিশুদের মাথা ধারালো কেঁচি দিয়ে এলোপাতাড়ি ন্যাড়া করে দেয় এবং ভিকটিমদের আত্মীয়স্বজনকে ডেকে এনে সাদা কাগজে মুচলেকা রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে শিশুদের আটকে রাখে।
এ ঘটনা অভিযুক্ত রাজিবের বাবা কারখানার মালিক মো. মালেক ও বড় ভাই রাজু আহমেদ জানলেও তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো শিশুদের অভিভাবকদের হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি র্যাব-১০ জানতে পারলে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে শিশুদের উদ্ধার করে।
নির্যাতনের শিকার শিশু রানার মা সাথী বেগম বলেন, আমার ছেলে চুরি করতে পারে না। সে যদি চুরি করেও থাকে তাহলে দেশে আইন আছে, বিচার আছে। কোনো সুস্থ মানুষ একটা শিশুর ওপর এভাবে নির্যাতন চালাতে পারে না। অতিরিক্ত নির্যাতনের ফলে শিশুগুলো ঠিকমতো হাঁটতেও পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১০-এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানির (সিপিসি-২) কমান্ডার মেজর ওবাইদুর রহমান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা ঘটনাটি জেনেই কারখানা মালিক ও তার বড় ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। অভিযুক্ত রাজিব ও কারখানার কর্মচারীদের এখোনো পাওয়া যায়নি। নির্যাতনের শিকার চার শিশুকে তাদের স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।