জামায়াত-বিএনপির সমর্থক ভূমিদস্যু শরিফুল ইসলাম মুকুল খানের কাণ্ড
প্রকাশিত: ৪-৮-২০২১ রাত ৮:২২
নড়াইল সদর উপজেলার কুখ্যাত ভূমিদস্যু তুলারামপুর ইউনিয়নের জামায়াত-বিএনপির সক্রিয় নেতা শরিফুল ইসলাম মুকুল খানের কার্যকালাপ দেখে জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি তিনি নিজের ছবি দিয়ে আগামী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছেন। তার এই প্রচার-প্রচারণা দেখে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা ক্ষোভে ফুঁসছেন।
তৃনমূলের একাধিক নেতাকর্মী জানান, মুকুল খানের মতো জামায়াত-বিএনপির সমর্থক ও একাধিক নাশকতা মামলার আসামি কিভাবে নৌকা মার্কার মনোনয়ন দাবি করে। এরা হলো বসন্তের কোকিল। বসন্ত চলে গেলে এদের আর পাওয়া যাবে না। মুকুল খান তার কালো টাকায় কতিপয় রাজনৈতিক নেতাকে ম্যানেজ করে বর্তমানে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হয়েছে, যা তুলারামপুর থেকে কেউ মেনে নিতে পারেনি। দলের এই সুময়ে সুখপাখিদের দল থেকে অনতিবিলম্বে বিদায়ের দাবি জানান আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন নেতারা।
জানা গেছে, মুকুলের বিরুদ্ধে হিন্দু সংখ্যলঘুদের জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করার অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবার এাকধিকবার তুলারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো ফল হয়নি। চেয়ারম্যান হিন্দু পরিবারকে বিচারের আশ্বাস দিলে উল্টো চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে নানারকম অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই মুকুল খান। হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি জবরদখল ও অবৈধ ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে এই মুকুল খান।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, শরিফুল ইসলাম মুকুল খানের বাড়ি সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের তুলারামপুর গ্রামে। তার বাবা ছিলেন একজন কৃষক। দিন আনা দিন খাওয়া এই পিতা অনেক কষ্টে সংসার চালাতেন। তারই পুত্র মুকুল। আজ সেই মুকুল খান কোটিপতি। তিনি যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন। যশোরে তৈরি করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। নিজ গ্রামেও গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন সম্পদ। তার এই হঠাৎ করে বেড়ে ওঠা দেখে এলাকাবাসী বিস্মিত। তার সম্পত্তি যেন জেলার গণ্ডি পার হয়ে ভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনবিপন্থী এই মুকুল খান টাকার বিনিময়ে বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতা বনে গেছে।
ইউনিয়নের তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, যে পরিবারের নামে জামায়াত-বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও মামলা রয়েছে, তারা কিভাবে আওয়ামী লীগের পদ-পদবী পায়। এটা নিয়ে জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে- কালো টাকার প্রভাবে আওয়ামী লীগের কতিপয় রাজনৈতিক নেতাকে নগদ নারায়ণে তুষ্ট করে আওয়ামী লীগের পদ-পদবী পেয়েছে। বর্তমানে তুলারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করতে চায়।
অনেকে বলেন, অবৈধ সম্পদের জোরে এলাকায় মুঠো মুঠো টাকা ছড়িয়ে মানুষের মন জয় করার প্রয়াস চালাচ্ছে। বাস্তবে তার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি তুলারাপুর ইউনিয়নের জনগণ কোনোভাবেই মুকুল খানকে ভোট দেবে না বলে জনান স্থানীয় একটি মহল। এলাকাবাসী তার অবৈধ সম্পদের তদন্তপূর্বক সত্যতা উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
অনেকের ধারণা, দুদকের তদন্ত হলে বেরিয়ে আসতে পারে ধলের বিড়াল।