রাবিতে হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনে ‘নিরাপদ’ খাবারের দাবি

news paper

অর্পণ ধর, রাবি

প্রকাশিত: ২৭-৩-২০২৩ দুপুর ৪:১০

31Views

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনে ‘নিরাপদ’ খাবারের দাবি জানিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। আজ(২৭ মার্চ) সোমবার দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এক মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রতিটি হলে প্রার্থনা কক্ষসহ একাধিক দাবি জানান।
 
তাদের দাবিগুলো হলো- রমজানে হলগুলোর ডাইনিং এবং ক্যান্টিনে তিন বেলা পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। ডাইনিং এবং ক্যান্টিনে গরুর মাংস বন্ধ করতে হবে অথবা হিন্দুদের জন্য আলাদা ডাইনিং ও ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে। সনাতনী শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলোতে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করতে হবে। সনাতনী শিক্ষার্থীদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসিক হল নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রতিদিন পূজা-অর্চনার জন্য পুরোহিত, সেবাইত নিয়োগ করতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্দিরে নিরাপত্তা বিধানে সিসি-টিভি স্থাপন করতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্দিরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে উপাসনার জন্য পূর্ণাঙ্গ নাট মন্দির স্থাপন করতে হবে। বিভিন্ন হলে সাধারণ ও সনাতনী শিক্ষার্থী নির্যাতন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
 
কর্মসূচিতে ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রীমন ধর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জিয়াউর রহমান হলে খাবারের তালিকায় গরুর মাংস যোগ করা হয়েছে। এটি আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি অস্বাভাবিক বিষয়। আমরা অসাম্প্রদায়িক চিন্তা লালন করি। আমারা চাই প্রতিটি হলের মধ্যে একটা করে প্রার্থনা কক্ষ থাকুক। যেখানে আমরা প্রার্থনা করতে পারি। সেটি যদি সম্ভব না হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের জন্য আলাদা একটি হল করে দেক। যেখানে আমরা সনাতনীরা একসাথে থাকতে পারি। সেখানে আমরা প্রার্থনা এবং আলাদা খাবার তালিকা করতে পারব।
 
এসময় সোমা রায় নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের হলগুলোতে আলাদা কোনো প্রার্থনালয় নাই, একরুমেই পাশাপাশি মুসলিম বান্ধবী বা বড় আপুদের সাথে বেড শেয়ার করে থাকতে হয়। রুমে কোনো দেবদেবীর মূর্তি বা ছবি রাখতে পারি না। খাওয়া দাওয়াও আমাদের অনেক নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। এক চামচ দিয়েই গরুর মাংস এবং অন্যান্য মাংস পরিবেশন করা হয়। প্রতিটি হলেই আমাদের জন্য যদি একটা করে উপাসানালয় থাকত, আলাদা খাবার ব্যবস্থা থাকত তবে আমাদের জন্য ভালো হতো।
 
সৌধা রানী নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সবাই মিলেমিশে থাকতে চাই। কিন্তু একসাথে থাকতে গিয়ে আমদের মাঝে মধ্যে ছোট ছোট বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। আমরা সবসময় এক রুমে একই ধর্মাবলম্বীর মানুষ থাকতে পারি না। ফলে রুমে বিভিন্ন চিত্রপট রাখতে পারি না। ছবি রাখলেও তা সবসময় ঢেকে রাখতে হয়। আরাধ্যের কাছে আমরা তো চাই সবসময় প্রার্থনা করতে। যখন আমরা ঢেকে রাখব, তখন তো আমরা তার কথা ভুলো যাব। আমাদের ধর্মে কিছু জিনিস আছে যেগুলো ওরা খায় না। আবার ওদের ধর্মে অনেক কিছু আছে যেগুলো আমরা খাই না। এগুলো একসাথে রান্না করতে কষ্ট হয়ে যায়।
 
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী দীপু চন্দ্র রায়। এসময় কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক সনাতনী শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন