২৩ জুলাই শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা, কষ্টে জীবনযাপন করা জেলেদের মুখে হাসি

news paper

সাঈদ ইব্রাহিম,পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২-৭-২০২১ দুপুর ২:১৬

11Views

কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটাসহ সমুদ্র উপকূলের জেলেপল্লীগুলো আবার দীর্ঘ সময় পর সরগরম হয়ে উঠেছে।

বঙ্গোপসাগরে ৬৫ দিনের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ২৩ জুলাই শুক্রবার। ওই দিন মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে সমুদ্রে যাবেন জেলেরা। প্রস্তুতির জন্য সরগরম হয়ে উঠেছে জেলেপল্লী ও মৎস্যবন্দরগুলো। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহ‍ৎ মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুরসহ কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও জেলেপল্লীগুলোতে কর্মতৎপরতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। বরফকলগুলোতে বরফ উৎপাদনের প্রস্ততি শুরু করেছে।

মহামারী করোনা ভাইরাস ও সমুদ্রে ৬৫ দিনের অবরোধের কারণে কষ্টে জীবনযাপন করা জেলেদের মুখে হাসি ফুটে ‍উঠেছে। সমুদ্রে ফিরে গিয়ে ইলিশ শিকার করে নিয়ে আসবেন তীরে- এমন আশা নিয়ে সমুদ্রে যাবেন জেলেরা। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মৎস্য আড়তগুলোতে নতুন করে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ জেলেপল্লী ঘুরে দেখা গেছে, গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলোতে জাল, বয়া, গ্রাফি, তেল. ডালসহ মৎস্য উপকরণ বোঝাই করে অপেক্ষা করছে ট্রলারগুলো। অপেক্ষা করছে কখন শেষ হবে অবরোধের সময় আর মধ্যরাতে বন্দর ছেড়ে সমুদ্রের উদ্যেশে যাবে মাছ শিকারে।

গভীর সমুদ্রের ইলিশ শিকারি কুয়াকাটার জেলে হানিফ মাঝি, রুস্তুম মাঝি, সোহরাব মাঝি, হারুন মাঝি, আক্কাস মাঝি, সুলতান মাঝি বলেন, অবরোধের সময়সীমা যতই ঘনিয়ে এসেছে ততই অপেক্ষার বাঁধও ভেঙে যাচ্ছিল কখন সমুদ্রে যাব। কখন ইলিশ ধরে নিয়ে এসে বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদের মুখে হাসি ফুটাব। ১৫ দিন আগেই তারা জাল ও ট্রলার মেরামত শেষে মৎস্য উপকরণ বোঝাই করে সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছেন। অবরোধ শেষ শুক্রবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাতেই ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন তারা। আরো বলেন, অবরোধকালীণ সরকার বিশেষ প্রণোদনর চাল দিলেও তাতে তাদের সংসার চলছে না। তাদের দাবি, অবরোধকালীন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার।

কুয়াকাটা আশার আলো জেলে সমবায় সমিতির সভাপতি মো. নিজাম শেখ দৈনিক সাকালের সময়কে বলেন, প্রজনন মৌসুমের ৬৫ দিন অবরোধ শেষে জেলেরা ২৩ জুলাই মধ্যরাতে সমুদ্রে ইলিশ শিকারে রওয়ানা হয়ে যাবেন। অবরোধের ৬৫ দিন জেলেরা অনেক কষ্টে জীবণযাপন করেছেন। নিজাম শেখ আরো বলেন, ৬৫ দিনে ৫৬ কেজি চাল দিয়ে জেলেদের সংসার চলে না। প্রজনন মৌসুম ও ঝাটকা মৌসুমের জন্য রেশন কার্ড চালুর দাবি জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, সমুদ্রে ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকারের মাধ্যমে দেশের মৎস্য চাহিদা পূরণ করে আসছেন জেলেরা। অথচ জেলেরা সমুদ্রে মাছ শিকারে গিয়ে ঝড় কিংবা জলোচ্ছাসে সমুদ্রে ডুবে মারা যাওয়ার পর তাদের পরিবারকে খাবারের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। তাই তিনি নিবন্ধনকৃত জেলেদের জন্য ঝুঁকিভাতা চালুর জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, সরকারের নির্দেশক্রমে ৬৫ দিনের অবরোধ শেষ হবে ২৩ জুলাই। আমরা আশাবাদী, এ বছর সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর বড় ইলিশ মাছ ধরা পড়বে। তাই জেলেদের নিরাপদ মৎস্য শিকার নিশ্চিত করতে যৌথবাহিনী জলদস্যু দমনে কাজ করছে।


আরও পড়ুন