দেশে বাড়ছে মোবাইল জুয়ার প্রবণতা

news paper

বাঁশখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৫-১১-২০২২ দুপুর ৪:৫০

17Views

সাম্প্রতিক জুয়া খেলার আসর ছিল চায়ের দোকানে, রাস্তার মোড়ে,পাহাড়ি নির্জন এলাকায়,গরুর লড়াই, কুস্তি খেলাসহ বিভিন্ন নির্জন এলাকায়।তাও ছিল কতিপয় লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখন মোবাইল জুড়ে চলছে সাম্প্রতিকের সেই জুয়া।

মোবাইল জুয়ার প্রবনতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে,এতে ধ্বংস হচ্ছে যুব ও ছাত্র সমাজ। বিশেষ করে মোবাইল জুয়ার প্রবনতা বেড়ে যায় বিশ্বকাপ ফুটবল ও টি-টোয়েন্টিসহ ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে। তাও আবার বিভিন্ন দলের সাপোর্টারদের মাঝে বেশিই প্রতীয়মান হয়। সেই জুয়ার কবলে পড়ে একদিকে ছাত্র সমাজ হারাচ্ছে অর্থ ও আদর্শ।অপরদিকে যুব সমাজ অর্থ শূন্য হয়ে পড়ার পাশাপাশি জড়িয়ে যাচ্ছে চুরি, ডাকাতি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে।হত্যা রাহাজানীর মতো অপরাধও তাদের জন্যে কোনো ব্যাপার নয়।

খেলার সাপোর্টারদের মধ্যে দেশজুড়ে সৃষ্ট হচ্ছে ঝগড়া-বিবাদ,মারামারি -হানাহানি। যাহার প্রভাব  দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলের গোত্র পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে লেগেই থাকে।যুব ও ছাত্র সমাজে পরষ্পরের মধ্যে   প্রতিহিংসার সৃষ্টিও মোবাইল জুয়া প্রবনতার মূল হোতা যেন সেই বিশ্বকাপ ফুটবল ও টি-টোয়েন্টিসহ ক্রিকেট খেলা মোবাইলে সম্প্রচার।

মোবাইলে-মোবাইলে খেলার সম্প্রচার-রোধ করা না গেলে মোবাইল জুয়া প্রবনতা বন্ধ করা সম্ভব হবে কিনা তা বিবেচ্য!তাছাড়াও ছাত্র সমাজের কিছু কিছু খেলার সাপোর্টাররা বিভিন্ন দলের সাপোর্টার হিসেবে মরিয়া হয়ে পড়ে।যা যুব সমাজেও কম নয়। আর খেলায় হারজিত অবশ্যই রয়েছে,কিন্তু পছন্দের দল হেরে গেলে অনেকেই মেনে নিতে মোটেও রাজি নয়, ফলে অনেক সময় দল হেরে যাওয়ার বিষয়কে মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিতেও দ্বিধা করে না অনেকে।অপরদিকে উল্লাসে মেতে উঠে জিতে যাওয়া দলের সাপোর্টাররা।তাতে মূহুর্তে সৃষ্ট হয় মারামারি হানাহানি ও দ্বন্দ।সুতরাং দেশে খেলার সম্প্রচার মোবাইল থেকে শুরু করে প্রতিটি মিড়িয়া চ্যানেলে বন্ধ রাখা প্রয়োজনও বটে।

গেলো কয়েক বছর পূর্বে ইসমাইল হোসেন সম্রাট নামের সেই ক্যাসিনো সম্রাটকে পুলিশি আটকের খবর  মিড়িয়াজুড়ে শুরু হয় ক্যাসিনো আলোচনা। এখন দেশের বিভিন্ন পাড়া- মহল্লায়,গ্রামে-গঞ্জে,রাস্তা-ঘাট ও দোকানে মোবাইল জুয়ার প্রবনতা দেখে মনে হয় সেই ইসমাইল হোসেন সম্রাট দেশজুড়ে নতুন প্রজন্মে যেন পুনরায় জন্মনিচ্ছে।

এছাড়াও দেশে ছেয়ে আছে বিভিন্ন দেশের পতাকা, এতে অর্থনৈতিক অপচয়ও কম হচ্ছে না। আগামী ২০২৩ সালের দিকে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকটের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, এরই মধ্যে দেশের অর্থ অপচয় মোটেও হচ্ছে কি না? বহির্বিশ্বে যারা অর্থ পাচার করেছে এবং করছে তাদের সেই অপরাধের চেয়ে অর্থ অপচয়কে ছোট করে দেখার সুযোগ আছে কিনা তা যথাযথ অবগত নই, তবে মনে হয় যেন এটা কোনো অংশে কমও নয়।

বিশ্বকাপ খেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে  যেসব পতাকা সমর্থকরা টাঙাচ্ছে তাদের কাছেও প্রশ্ন থেকে যায়,ওইসব দেশে আমাদের দেশের খেলোয়াড়দের সাপোর্ট করে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয় কিনা? বা এদেশে যারা সাপোর্টার রয়েছে তাদেরকে ওইসব দেশের খেলোয়াড় কিংবা কেউ চিনেন কিনা?
দেশে মধ্যবিত্ত বা উচ্চ পরিবারের সন্তানরা তাদের পছন্দের দলের জার্সি কিনে পরিধান করছে, আর ব্যবসায়িরাও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছে একেক একটা জার্সি দাম ৫/৭শ থেকে ২ হাজার ২২শ টাকা পর্যন্ত। অথচ নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানদের অনেকে অন্যান্যদের মতো সমান তালে পছন্দের দলের সাপোর্ট করে যাচ্ছে।

জার্সি ক্রয় ও পতাকা টাঙানোর সামর্থ না থাকায় তারা হয়তো সামর্থ যোগাতে অসহায় বাবা-মায়ের উপর জুলম করবে না হয় ছিনতাইয়ের পথ বেঁচে নিতে পারে!সুতরাং দেশের অর্থ ও স্বার্থ রক্ষা এবং  খেলা কেন্দ্রিক আত্মহত্যা ও অরাজকতা ঠেকাতে এইসব প্রবনতা রোধ করার দ্রুত পদক্ষেপ জরুরিও বটে।


আরও পড়ুন