ঝিনাইদহে ভালোবেসে বিয়ের দুই মাসের মাথায় স্বামী-স্ত্রী’র আত্মহত্যা
প্রকাশিত: ২৪-১১-২০২২ দুপুর ২:৪৯
ভালোবেসে বিয়ের দুই মাসের মাথায় ঝিনাইদহের সদর উপজেলায় ফাঁসিতে ঝুলে স্বামী-স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। রমজান ও মুক্তা ভালোবেসে প্রায় দুই মাস আগে ঘর পেতেছিলেন । কিন্তু সারাজীবন আর এক সঙ্গে থাকা হল না দুজনের। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে
উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠ থেকে স্বামী রমজান ও স্ত্রী মুক্তার ঝুলন্ত মরাদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের বুকে ও হাতে মেহেদী দিয়ে লেখা ছিল ‘আমি মুক্ত ও রুজিব। আমরা চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য পরিবার দায়ী। হাতে মেহেদি দিয়ে লেখা ছিল সব আমার মায়ের দোষ, আমরা চলে যাচ্ছি।
মৃত রমজান হোসেন রুজিব (২০) সদর উপজেলার তালতলা হরিপুর গ্রামের চমু শেখের ছেলে এবং মুক্তা খাতুন (১৮) হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিন্নি গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে। রমজান হোসেন শহরের হামদহ এলাকার একটি মটর গ্যারেজে কাজ করত।
গ্রামবাসীরা জানায়, প্রায় দুই মাস আগে রমজান হোসেন প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অজান্তে মুক্তা খাতুনকে বিয়ে করে। এরপর থেকেই উভয় পরিবারের লোক তাদের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না। এ নিয়ে তাদের ও উভয় পরিবারের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার সকালে মুক্তা খাতুনকে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া কথা ছিল। এরই জেরে রমজান ও মুক্তা গেল রাত ২ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে সকালে বাড়ির পাশ্ববর্তি হাটবাকুয়া গ্রামের মাঠের একটি মেহগনি গাছ থেকে তাদের ঝুলন্ত মরাদেহ উদ্ধার করা হয়।
পাশের গ্রামের আখি খাতুন নামের এক নারী জানান, ছেলেটা দুই মাস হয়েছে বিয়ে করেছে। প্রথম দিকে কয়েকদিন পর তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিল পরিবারের লোকজন। কিন্তু এর কয়েকদিন পর মেয়ের পরিবারের লোকজন ছেলের বাড়িতে আসলে শুরু হয় বিপত্তি। সেসময় থেকেই তারা আবার মুক্তা ও রুজিবের সম্পর্কে বাধা দিতে থাকে। পৃথক করে দিতে চায় তাদের। আজ মুক্তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বাবার বাড়ির লোকজনের।
কিন্তু রমজান ও মুক্তা এক সাথে থাকতে চাই। এ জন্য হয়তো তারা আত্মহত্যা করেছে।
নিহতের বড় ভাই রবিউল ইসলাম শেখ বলেন, আমরা রাতের খাবার খেয়ে এক সাথে বসে অনেক গল্প হাসি টাট্টা করে যার যার রুমে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে খবর পাই তারা দুজন মাঠের একটি মেহগুনি গাছের ডালে রশিতে ঝুলে আত্মহত্বা করেছে । তিনি আরো জানান কেনো তারা এ কাজ করলো বলতে পারছিনা।
মেয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, দুই মাস আগে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আজ আমাদের মেয়েকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেনো তারা আজ এ কাজ করলো জানি না ।
ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গাছের সঙ্গে মেয়ের ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ ঝুলছিল। পারিবারিক কলহের জেরে এই আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।