ত্বকের যেসব লক্ষণে বুঝবেন কোলেস্টেরল বেড়েছে

news paper

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩-১১-২০২২ দুপুর ১১:৪৯

24Views

শরীরের কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যায় । আর এমন জীবনযাপন যদি করেন যেমন বেশি শুয়ে বসে থাকা। অত্যধিক পরিমাণে ধূমপান, অ্যালকোহল পান, জর্দা সেবন, অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার যেমন তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, জাঙ্ক ফুড, মাখন, মেয়োনিজ ইত্যাদি খেলে যেকোনো সময় কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। আর কিছু রোগ রয়েছে কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি। আর কিছু ওষুধ আছে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

কোলেস্টেরল রক্তে থাকা মোমের মতো দেখতে এক প্রকার চর্বিজাতীয় তৈলাক্ত পদার্থ। মানবদেহের প্রায় প্রত্যেক কোষ ও টিস্যুতে কোলেস্টেরল থাকে। যকৃৎ ও মগজে এর পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কোলেস্টেরল লিপোপ্রোটিন নামক যৌগ সৃষ্টির মাধ্যমে রক্তে প্রবাহিত হয়। কোলেস্টেরল রক্তে বাড়লে তা জমা হয় রক্তনালীর ভিতর। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক হয়ে যাওয়া হল খুবই জরুরি। কারণ কোলেস্টেরল শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমতে পারে। এমনকী পায়েও জমতে পারে কোলেস্টেরল। তাই কোলেস্টেরল বাড়ার লক্ষণ পায়েও দেখা যায়।

রক্তে তিন ধরনের লিপোপ্রোটিন দেখা যায়, যেমন—নিম্ন ঘনত্ববিশিষ্ট লিপোপ্রোটিন (এলডিএল), উচ্চ ঘনত্ববিশিষ্ট লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) ও ট্রাই-গ্লিসারাইড। এলডিএল-কে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়, খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলেই দেখা দিতে পারে সংবহনতন্ত্রের সমস্যা,বেড়ে যায় স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি। সাধারণত মানুষের রক্তে শতকরা ৭০ ভাগ এলডিএল থাকে। এইচডিএল-কে ভালো কোলেস্টেরল বলা হয়। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। আর ট্রাই-গ্লিসারাইড চর্বি হিসেবে রক্তের প্লাজমায় অবস্থান করে। ট্রাই-গ্লিসারাইড মানুষের খাদ্যের প্রাণিজ চর্বি অথবা কার্বোহাইড্রেট থেকে তৈরি হয়ে থাকে।

অধিকাংশ সময়ে কোলেস্টেরলের সমস্যা বেড়ে গেলেও বোঝা যায় না। তাই সময় থাকতে উপসর্গগুলো চিনে নেওয়া জরুরি। গবেষকদের মতে, ত্বক সে কথা জানান দেয়। ইঙ্গিত বুঝে নেওয়ার উপায় জানা থাকলেই হল। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব ডার্মাটলজি’র বক্তব্য এমনই। ত্বকে কী ধরনের পরিবর্তন দেখলে সাবধান হতে হবে? কখন কোলেস্টেরলের মাত্রা বোঝার জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে?

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক সময়ে কমলা চাকা চাকা র‌্যাশ দেখা দেয় ত্বকে। তবে এগুলি সাধারণ র‌্যাশের মতো নয়। কিছুটা হলদেটে ভাব থাকে। বিশেষ করে চোখের উপরে দেখা যায় এই ধরনের ফোলা ভাব।

অনেক সময়ে আবার মোমের মতো ফোলা ভাব দেখা দেয় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে। হাত কিংবা গলায় এমন দাগ দেখে অনেকেই মনে করেন অ্যালার্জির সমস্যা। কিন্তু তা নয়। কাছে গেলেই বোঝা যায়, এর মধ্যে তেলতেলে ভাব আছে। এই উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হন। অনেক সময়ে আবার হঠাৎ কিছু দিনের জন্য লালচে ভাব দেখা দেয় ত্বকে। তা আবার সেরেও যায় দিন কয়েকের মধ্যে। এ-ও হল কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ারই লক্ষণ।

অনেক সময় দেখা মুখের মধ্যে বা যৌনাঙ্গে ঘায়ের মতো উপসর্গ। মাঝে মধ্যেই এমনটা হলে সতর্ক হন। কোলেস্টেরল হানা দিতে পারে শরীরে।
শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রক্তসঞ্চালন ব্যহত হয়। ফলে শরীরের কোষে কোষে রক্ত পৌঁছতে পারে না। এর ফলে চামড়ার রং গাঢ় হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এমনটা হলেও সতর্ক হন।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য ওটস, বার্লি, গম, ভুট্টা, বিনস, টমেটো, বেগুন ও ঢেঁড়শ, বাদাম, আপেল, আঙুর, স্ট্রবেরি, বিভিন্ন লেবু, বিভিন্ন ধরনের ফল-শাকসব্জি নিয়মিত খেতে হবে। সয়া, সয়া থেকে তৈরি খাবার যেমন সয়াবিন, টফু এবং সয়া দুধ খাওয়া খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাছ, যেমন স্যালমন, টুনা, সারডিন ইত্যাদি মাছে ওমেগা থ্রি থাকে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এই মাছ খেলে কোলেস্টেরলের সমস্যা অনেকটাই কমে যায় বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি।

শারীরিক পরিশ্রম কিংবা ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত। এটি শুধু রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় না, উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রাও ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম। যারা সময় করে উঠতে পারছেন না, তারা জোরে হাঁটুন। কমপক্ষে ৪৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ুন।


আরও পড়ুন