দুরন্তপনার ৫ বছর!

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬-১০-২০২২ বিকাল ৫:২৮

14Views

শিশুরা কি শিক্ষা নিতে পছন্দ করে? নাকি কেবল আনন্দ পেতে? নাকি শিশুদের খেলাচ্ছলেই দেয়া যায় একটি উদার ও গ্রহণমূলক পৃথিবীর সন্ধান? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘‘আনন্দহীন শিক্ষায় কোনো মতে কাজ চলে মাত্র, মনের বিকাশ হয় না’’। বলা বাহুল্য, সনাতন পদ্ধতিতে শিশুদের পাঠদানের ধারণা থেকে বের হয়ে আসছে আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এই নবযাত্রায় শিশুদের বিনোদনের মাধ্যমে উন্নত জীবনবোধ বিকাশের একটি দায়িত্ব নিয়েছে দুরন্ত টিভি। প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে শিশুদের নিয়ে নতুন কিছু করার ভাবনা থেকে ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে খুব অল্প সময়েই শিশু মনে স্থান করে নেয় চ্যানেলটি। দর্শকের আস্থা অর্জন করে পাঁচ বছর পেরিয়ে দুরন্ত এবার ছয় বছরে পদার্পণ করতে চলেছে।

‘‘আমি চার বছরেরও বেশি সময় দুরন্ত টিভির সঙ্গে কাজ করেছি যা আমার জীবনের সেরা সময়, দুরন্ত টেলিভিশন আমাদের জন্য একটি অভয়ারণ্য”, বলছিলো দুরন্ত’র দর্শক ও শিশুশিল্পী ওয়াজিউর রহমান প্রথম। মুক্ত বিহঙ্গের মতো ‘অভয়ারণ্য’ যে শিশুদেরও প্রয়োজন সেই বোধই অনুপ্রাণিত করেছে দুরন্তকে।

চ্যানেলটির অনুষ্ঠান পর্যলোচনা করে দেখা যায়, সকাল ৭টায় শিশুদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়, এরপর বাংলায় ভাষান্তরিত বিভিন্ন বয়সভিত্তিক কার্টুন, নানান ধরণের পাপেট-শো, লাইফস্টাইল প্রোগ্রাম, শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশে যেসব অবশ্যম্ভাবী যথা চিত্রাঙ্কন, সংগীত চর্চা, নৃত্য, ক্রাফটিং, শারীরিক ব্যায়াম, আত্মরক্ষার কৌশল, ভাষার ব্যবহার, বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি, বিদ্যালয়ে দলগত কাজের মানসিকতা তৈরি, গল্প পাঠ, আবৃত্তি, ভ্রমণ থেকে শুরু করে যাদু প্রদর্শনী, সেইসাথে বিভিন্ন শিক্ষনীয় অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বেশ মজার ছলে প্রচার করা হয়।

শিশুদের জন্য একটি আনন্দময় জগৎ তৈরির উদ্দেশ্য থেকে দুরন্ত টিভি অনুষ্ঠানমালা নির্ধারণ করে থাকে। সেই আলোকেই নির্মাণ করা হয়েছে দুরন্ত টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দুরন্ত সময়, গল্প শেষে ঘুমের দেশে, সোনার কাঠি রূপার কাঠি, মা-বাবাই সেরা, খাট্টা মিঠা, দুষ্টু মিষ্টি, বর্ণমালার ঘর, রঙ বেরঙের গল্প, মাস্টারমাইন্ড ফ্যামিলি, জানার আছে অনেক কিছু, বানাই ইফতার মা বাবা আর আমি, বানান মানে ঝঢ়বষষরহম, দি ইংলিশ ক্লাব, নাচের ইশকুল, রঙের খেলায় সুরের ভেলায়, চলো যাই যাই যাই ইত্যাদি। এছাড়া দুরন্ত’র জনপ্রিয় নাটক টিরিগিরি টক্কা, ব’তে বন্ধু, বাবা থাকে বাসায়, গুড্ডু বুড়া, কাবিল কোহকাফী, অদ্ভুতুড়ে বইঘর, মনের যাদুকর, নয়নতারা বিদ্যালয়, ভূতের বাকশো, বোকা ভূত, লাল কোহিনূরে পারিবারিক বন্ধন, বন্ধুত্ব, শিশুর কল্পনাশক্তি ইত্যাদি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। শিশুমনে বিস্ময়, কৌতুহল আর আনন্দ জাগ্রত করে তাদের ইতিবাচক মানসিকতায় একটি মজার পৃথিবী উপহার দেয়াই দুরন্ত টিভির লক্ষ্য। 

দুরন্ত টিভির এই নিরন্তর পথচলায় যারা বিশেষভাবে সহযোগিতা করেছেন তেমনই একজন অভিভাবকের মন্তব্য, ‘‘আমার বাসায় পড়াশোনার ফাঁকে সবসময় দুরন্ত টিভি-ই চলে। এতে দেখা যাচ্ছে আমার মেয়ের সাথে সাথে আমরা বড়রাও জানতে পারছি অজানা অনেক কিছু। শিশুরা যখন দুরন্ত টিভি দেখে তখন প্রতিটা শিশুই যেন তাদের নিজেদের দেখতে পায় টিভির পর্দায়’’।

বাংলাদেশের মতো ছোট বাজার এবং দেশী চ্যানেলের স্বল্প দর্শকদের পুঁজি করে কেবল শিশুদের জন্যে গোটা একটি টিভি স্টেশন নির্মাণ দুঃসাহসী পরিকল্পনা ছিলো। আজ (৫ অক্টোবর) পাঁচ বছর পূর্ণ করে ছয় বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে চ্যানেলটি। এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে দুরন্ত টিভি তার উত্তর পাওয়া যাবে শিশুদের কাছেই।


আরও পড়ুন