মির্জা গালিব ও অপ-রাজনৈতিক টোটকা 

news paper

অনন্য প্রতীক রাউত

প্রকাশিত: ৩-১০-২০২২ দুপুর ৩:৪৭

81Views

কে এই মির্জা গালিব? বারবার ভাবনার পর ঘেঁটে জানলাম তাঁর সম্পর্কে। তবে শুরুতে এটুক নিশ্চিত ছিলাম তিনি স্বাধীনতা বিরোধী নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একজন পোস্টেড নেতা। যাই হোক বক্তব্য প্রদানের ক্যারিশমা বেশ ভালো। বর্তমান সময়ে তাঁকে নিয়ে এক মহা গুজব রটিয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ হতে তিনি ৯৮% নম্বর অর্জন করেছেন। 

অন্যদিকে তাঁকে রাজনৈতিক কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওনাকে শিক্ষক হিসেবে নেয়নি। এক prকার আ ক্ষেপ থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মন্তব্য করেন৷ অন্যদিকে ছাড়ানো হয় তিনি বিশ্ববিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত হয়েছেন৷ এ ধরনের অসত্য তীর্যক সত্য প্রভাবিত করে যুব সমাজকে৷ খুব সহজেই নিরপেক্ষ রাজনৈতিক ভাব ধারার অনেকেই বিভিন্ন ভাবে প্র শ্ন বিদ্ধ করতে থাকে সরকারের কর্মকাণ্ডকে৷ ছাত্রলীগকে নিয়ে এসব ক্ষেত্র তীর্যক মন্তব্য ও অন্যান্য বিষয়ে উস্কানি দেয় তথাকথিত শিবির ও বিরোধী গোষ্ঠীগুলো। বিষয়টি এক অর্থে খুব ক্ষুদ্র কিন্তু এর প্রভাব ভয়াবহ৷ পাশাপাশি ছাত্রলীগের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত নিশ্চয়ই। 

আবেগপ্রবণ এ জাতি বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভেবে নানা মন্তব্য প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি এতে ছাত্রশিবির ১% হলেও কারো মনে জায়গা করে নিয়েছে কিংবা যে ছেলেটা মেধাবী, গরিব, সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত সে নিশ্চয়ই ছাত্রশবির করবে এটা আমি গ্যারান্টি দিতে পারি। এই টোপ গুলা সংগঠনটির রাজনৈতিক অপকৌশল মাত্র৷ ফলশ্রুতিতে মেধাবী বিশেষত গরিব ও ইমম্যাচিউর যাদের ভালো চাকরি খুব দরকার এ ধরনের ছেলেরা শিবিরের সাথে নিজের অজান্তে জড়িয়ে পড়ছে৷ এমনকি এরা নিজেরাও জানে না তারা আসলে শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে বা কিভাবে অর্থাভাবে ফেঁসে গিয়েছে। এতে করে দেখা যাচ্ছে ক্লাসের মেধাবী ছেলেটাই ছাত্রশিবির করছে। মজার বিষয় হলো এরূপ ছাত্ররা জীবনেও মাঠের কর্মসূচীতে অংশ নিবে না। ওদের কাজ পড়াশোনা করা আর সংগঠনের কাজ ভালো একটা পজিশন বাগিয়ে দেয়া। দলের ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ তবুও এরা এসবে তৎপর। ভাবুন একবার কতোটা অসাধু, আদর্শহীন লোক বসে আছে এসবের সহায়তা করার জন্য? 

অন্যদিকে পরিচয় হীনতায় শতশত ছাত্রলীগ কর্মীর হাহাকার নতুন কিছু নয়৷ বরং দিনে দিনে সংখ্যাটা আরো বেড়ে চলেছে। এমনকি দিনশেষে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই হচ্ছে না চাকরিটি৷ এটাও সত্যি যে যাদের এসব কারণে চাকরি হচ্ছে না তাঁরা অনেকে অদক্ষ নিঃসন্দেহে। এদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাঠ, মাঠ করে প্রযুক্তি, কর্মদক্ষতা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলে দক্ষ জনশক্তি কোনদিন তৈরী হবে না এটা চিরন্তন সত্যি। হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য ঠিক তখনই সুরক্ষিত হবে। ছাত্রলীগ নামধারী শত শত বেকার আর তৈরী হবে না৷ মা-বাবার অবাধ্য সন্তানটি যিনি দেশের স্বার্থে অপশক্তি রুখতে জীবন, যৌবন বিলিয়ে দিয়ে আজ বোঝাস্বরূপ, জীবন নিয়ে এক প্রকার নিরুপায়। 

সংগঠনে সাংস্কৃতিক গতিশীলতা ও প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনশক্তি তৈরী করার সঠিক সময় এখনই৷ নিয়মিত কর্মী সভা ও মেধাবী কর্মী বাছাইয়েও দেখাতে হবে ক্যারিশমা৷ নয়তো আবারো মির্জা গালিবের মত কারো ভুয়া খবরে ভরসা রাখবে বেশীরভাগ জনগণ। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে ছাত্রলীগ ও বর্তমান সরকারের ইমেজ। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্র য়োজনীয় সৃষ্টি করা হোক শিক্ষাবৃত্তি। তাঁদের ছাত্রলীগ করতে হবে না তবে যেন বিরূপ ধারণা না জন্মে বা তাঁরা বিপথে না যায় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে ছাত্রলীগকে৷ এভাবে রাজনৈতিক কৌশল ছাত্রলীগ কোনদিন করে নি৷ তবে সময়ের প্রয়োজনে করা উচিত নিশ্চয়ই। বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী উক্তিটি স্মরণে না রাখার তো কোন বিকল্প নাই৷ "যখন তুমি কোন ভদ্রলোকের সাথে খেলবে, তখন তুমি ভদ্রলোকের মতো খেলবে, কিন্তু যখন তুমি কোনো বেজন্মারর সাথে খেলবে, তখন তোমাকে নিশ্চিত হতে হবে তুমি তার চাইতে বড় বেজন্মার মতো খেলবে। নচেৎ পরাজয়
 নিশ্চিত "।

এখনই রাজনৈতিক কৌশল ও দক্ষ জনশক্তি তৈরীর বিষয়ে সংগঠনকে আরো পর্যাপ্ত ভাবনা ভাবতে হবে।রাজপথের দক্ষ কর্মী তৈরীতে যেমন ছাত্রলীগ সিদ্ধহস্ত তেমনী দক্ষতা নির্ভর যেকোন কর্মেই জয়জয়কার ঘটে যাক বঙ্গবন্ধুর পবিত্র হাতে গড়া সংগঠনটির সদস্যদের নাম৷ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসেবে অলরাউন্ডিং পারফরমেন্স টা ছাত্রলীগের কাছ থেকে নিশ্চয়ই কামনা করে স্বাধীনতা সপক্ষের ব্যক্তিবর্গ৷ সুতরাং, উত্তম সময় এখনই ভবিষ্যতের ভাবনা ভাববার ও বাস্তবায়নের।

অনন্য প্রতীক রাউত 
কর্মী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। 


আরও পড়ুন