পোষা প্রাণী বা পাখির যত্ন কিভাবে নিবেন

news paper

আব্দুর রব সুজন

প্রকাশিত: ২৯-৯-২০২২ দুপুর ১:৫২

117Views

শহরে যারা থাকেন, অনেকেই শখের বশে ঘরে প্রাণী পুষেন। প্রাণী পোষার প্রতি শহরবাসির আগ্রহ বাড়ছে দিনদিন। পোষা প্রাণী অনেকের নিঃসঙ্গতা দূর করে। সাধারণত দেশি-বিদেশী কুকুর, বিড়াল অথবা পাখি পোষা হয়ে থাকে। পোষা প্রাণীর যত্ন যদি সঠিকভাবে নেওয়া না হয়, তাহলে বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হতে পারে পোষা প্রাণীর। অনেক সময় পোষা প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে সঠিক চিকিৎসা ও যত্নের অভাবে।  পশুপাখি কিভাবে পুষতে হবে বা পালন করতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন- কেন্দ্রীয় ভেটেনারি হাসপাতালের ভেটেনারি অফিসার ডা. রেজাউল করিম। তিনি জানান- এই সময়ে শহরের বাসায় পশুপাখি পালন বেড়েছে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই ঘরে প্রাণী বা পাখি পুষছেন। যত্ন করে খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। সমস্যা হচ্ছে সঠিক পরিচর্যার অভাবে অনেক সময় পশুপাখি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারছে প্রাণী বা পাখির মৃত্যুও হচ্ছে। যেসব পশুপাখি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, আক্রান্ত প্রাণী যদি সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তাহলে রোগ নির্ণয় করে সঠিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। বাসায়  যারা বিড়াল, কুকুর ও বিভিন্ন প্রকার পশুপাখি পালন করছেন, প্রাণী ও পশুপাখির যত্ন ও পালন সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে পশুপাখিগুলো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং অনেক সময় প্রাণী বা পাখির অসময়েমৃত্যু হচ্ছে। প্রাণী ও পাখির অস্বাভাবিক অসুখ ও অসুখজনিত মৃত্যু নিয়ন্ত্রণের জন্য যারা প্রাণী বা পাখি পালন করবেন, তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। যারা পশু পালন করছেন, তারা চাইলে অনলাইনে পশুপাখি পালন (অহরসধষ ঐঁংনধহফৎ) অ্যাপের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। প্রশিক্ষণের ফলে সঠিকভাবে পশুপাখি পালন করতে পারবেন। কেন্দ্রীয় ভেটেনারি হাসপাতালে নিয়মিত প্রতিদিন প্রায় ১০০-১৫০ প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই হাসপাতালে বিনামুল্যে বিড়াল ও কুকুরের বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধক ভ্যা কসিন দেওয়া হয়। তবে পাখির ক্ষেত্রে ভ্যা কসিন দেওয়া হয় না। পাখির ক্ষেত্রে সাধারণত মুরগির এন্টিবায়টিক ঔষধ দেওয়া হয়। কারণ পাখির ভাইরাস প্রতিরোধক কোন ঔষধ নেই।

ঘরে প্রাণী বা পাখির যত্ন নিবেন যেভাবে-
খাবার খাওয়াতে হবে যেভাবে: খাবারের গুণগত মানও যেন ঠিক থাকে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে প্রতিদিন সকালে পাত্রে দিয়ে রাখুন। পানি নোংরা হলে পুনরায় বদলে নিন। আর পানির পাত্রটি যেন প্রতিদিন পরিষ্কার থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

কোন প্রাণী বা পাখির কোন ধরণের খাবার দেওয়া ভালো: প্রাণী বা পাখির খাবার একেক রকম। যেসব খাবার প্রাণী বা পাখির খাদ্য তালিকায় নেই, সেগুলো খাওয়ানো যাবেনা। এতে পাখির সমস্যা হবে। সাধারণ খাবার থেকে ক্যালসিয়ামসহ আরও কিছু খনিজ উপাদান সঠিক মাত্রায় পায় না। তাই খনিজ উপাদানের জোগান দিতে কাটলফিশ বোনের টুকরা, মিনারেল ব্লক খাঁচায় রেখে দিতে হবে। কেবল ধান, গম, যব বা ভুট্টা খাওয়ালেই হয় না। শাক, বরবটি, অ্যালোভেরার রসের মতো খাবার দেওয়াও জরুরি। ফিশার্স লাভবার্ডকে যেমন সপ্তাহে এক দিন শজনেপাতা দিলে উপকার পাবেন। কুকুর কিংবা বিড়ালকে ছোট অবস্থায় দিনে ছয় থেকে সাতবার খাবার খেতে দিন। মাছ, মাংস, ভাত খাওয়াতে পারেন। পোষা প্রাণীকে প্রতি তিন মাস অন্তর কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ান।
প্রাণী বা পাখির গোসল কেমন হওয়া দরকার: প্রাণী বা পাখির ঘরে দুপুরের দিকে গোসল করার জন্য আলাদা পাত্রে পরিস্কার পানি দিয়ে রাখতে হবে। গোসল শেষ হলে নোংরা পানি ফেলে দিতে হবে।প্রাণী বা পাখির থাকার ঘর কেমন হওয়া দরকার: পাখি খাঁচায় বন্দি থাকায় ‘শরীরচর্চা’ ঠিকমতো হয় না। পাখির ক্ষেত্রে খাঁচার ভেতর মই, দোলনা, ঝুনঝুনি, প্লাস্টিকের বল রেখে দিন যাতে খেলাধুলা করতে পারে।
মল বা বিষ্ঠা পরিষ্কার করার জন্য কি টেকনিক অবলম্বন করা যেতে পারে: নিয়মিত খাঁচা পরিষ্কার করতে হবে। মল বা বিষ্ঠা বেশিদিন জমা থাকলে বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হতে পারে।
ঘরের তাপমাত্রা কেমন হওয়া দরকার: রোদ, বৃষ্টি, বাতাস কিংবা অতি শীতে খাঁচা রাখা যাবে না। খাঁচাটি এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন সরাসরি সেখানে রোদ না পড়ে। হাওয়া এসে ধাক্কা দেয় না, শীত হানা দেয় না।


আরও পড়ুন