জবির প্রথম 'ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার' রিদয়

news paper

ইউছুব ওসমান, জবি

প্রকাশিত: ২৫-৯-২০২২ দুপুর ৪:৫৪

18Views

প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার প্রতি সাধারণ মানুষের কৌতূহল থাকে বেশ। আর সেই কৌতূহলের কারণে অনেকেরই ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফির প্রতি ভালবাসা জন্মায়। সেই ভালবাসা থেকেই অনেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফিকে। তেমনি পড়াশোনার পাশাপাশি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারদের তালিকার নিজের নামের স্থান করে নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এক শিক্ষার্থী। মির্জা মো: মুন রিদয় নামের ঐ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের পড়াশোনা করছেন।
 
ছোটবেলা থেকেই মুনের স্বপ্ন একজন বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফার হিসেবে 'ন্যাশনাল জিওগ্রাফির' (ন্যাটজিও) সাথে কাজ করবেন। সেই লক্ষ্যে প্রথমে তিনি মোবাইল ফোন দিয়ে তার ফটোগ্রাফি শুরু করেছিলেন।ল্যান্ডস্কেপের ছবির পাশাপাশি পশু-পাখির ছবি শুট করতেন। ছোট বেলা থেকেই তার পশু-পাখির প্রতি আলাদা রকমের আবেগ ও ভালোবাসা কাজ করতো। বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা থেকে উঠে আসা এই তরুণ ইতোমধ্যে 'ফটোগ্রাফিতে' তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
 
সম্প্রতি তার ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফির বেশ কিছু ছবি স্থান পেয়েছে দেশ ও দেশের বাহিরের বিভিন্ন মিডিয়া ও জার্নালের অফিসিয়াল পেইজে। সর্বশেষ ইউনেস্কো আয়োজিত ‘ইউনেস্কো সিল্ক রোড’ প্রতিযোগিতায় তার একটি ছবি সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হয়েছে।
 
সম্প্রতি 'এসসিজি' এর ফটোগ্রাফি ক্লাবে ডিএসএলআর ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরুষ্কার পেয়েছেন। ক্যানন ইন্ডিয়ার অফিসিয়াল পেজে ফিচার পেয়েছেন। এছাড়াও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এবং ক্যানন ইন্ডিয়ার ফিচারের মধ্যে রয়েছে।
 
২০২১ সালে জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন। ২০২০ সালে ‘৩৫ জাতীয় পুরস্কার’ প্রতিযোগিতায় তার ১০০টি ছবি মোবাইল বিভাগে মনোনীত হয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের 'জাতীয় যুব ফটোগ্রাফি' প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা থেকে মেধা তালিকায় উর্ত্তীর্ন হয়েছেন। মজার বিষয় হচ্ছে ৫-৬ টি প্রতিযোগিতায় তার ১টি মাত্র ছবি যার নাম ‘এঞ্জেল ফল’ দিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ২০২১ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ফেইজবুক, টুইটার ও ইন্সটাগ্রাম অফিসিয়াল পেজে প্রকাশ করেছিল যে ছবির নাম ‘কিস অফ ডেথ’।
 
ফটোগ্রাফি নিয়ে মুনের ভবিষ্যত চিন্তা ভাবনা কী জানতে চাইলে তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, "কাজের মাধ্যমে নিজেকে জানাতে চাই। দেশ ও দেশের বাহিরে ফটোগ্রাফিতে নিজের নাম শক্তভাবে বসাতে চাই। 'ফেলিস ক্রিয়েশন', 'আকিজ ওয়াইল্ডলাইফ' এ কাজ করার ইচ্ছা আছে।"
 
কখনো জঙ্গলের হিংস্র পশুর সামনে পড়তে পড়তে বেঁচে যাওয়া, কখনোবা খরস্রোতা নদীতে বা পাহাড়ি পিচ্ছিল পথে বিপদ ঘটতে ঘটতে রক্ষা পাওয়া ওয়াইল্ডলাইফ ফটাগ্রাফারদের জীবনের নিত্যদিনের ঘটনা। তারপরও সেসব মানুষকে প্রতিনিয়ত আকর্ষণ করে যায় প্রকৃতির সেই বুনো গন্ধ, প্রাণীকূলের উদ্দামতা। কখনো এমন কোনো ঘটনার শিকার হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মুন রিদয় বলেন, "ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি সত্যিকার অর্থেই ঝুঁকিপূর্ণ। কখনো কখনো অনেক হিংস্র প্রাণীর সম্মুখীন হতে হয়। ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে বন্যহাতি, টাঙ্গুয়ার হাওরে চোরাবালিতে আটকা, রাসেল ভাইপার সাপের সম্মুখীন হয়েছি।"
 
সবশেষ, সবুজ পর্দার প্রতিভা স্কাউট থেকে একটি মেইল ​​পেয়েছেন। তারা তাকে প্রস্তাব দিয়েছেন তাদের ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করার জন্য। তার কাজকে সমর্থন জানিয়ে ইতালি, রাশিয়াসহ অন্যান্য রাষ্ট্র বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য মুনকে আমন্ত্রণ বার্তা পাঠায়।

আরও পড়ুন