নিয়মিত দাঁত না মাজলে হতে পারে লিভার ক্যানসার

news paper

সকালের সময় ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪-৯-২০২২ দুপুর ১১:৪৪

4Views

দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম না বোঝা মানুষের সংখ্যা অনেক। দাঁতের সঠিক যত্ন না নিলে একদিকে যেমন দাঁতে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, ঠিক তেমনই দাঁতে ব্যাকটেরিয়া, মুখের ভিতরে ঘা এবং নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হবে নিত্যসঙ্গী। সঠিকভাবে নিয়মিত দাঁত না মাজলে হতে পারে ভয়ঙ্কর রোগ। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল বিজ্ঞানী একটি গবেষণায় বলেছেন, মুখগহ্বর ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে বেড়ে যেতে পারে যকৃৎ, অগ্ন্যাশয়, কোলন ও মলদ্বারের ক্যানসারের আশঙ্কা।

দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় ক্যানসারের আশঙ্কা। এ কথা বার বার বলে আসছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী দাবি করলেন, যথাযথ ভাবে দাঁত না মাজলে বেড়ে যায় লিভারের ক্যানসারের আশঙ্কা। লিভার রক্ত পরিশোধন ও খাদ্য হজমসহ শরীরে বিভিন্ন কাজ করে। মানবদেহের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি লিভার। আপনার যদি লিভার ক্যানসার হয়, তাহলে এই অঙ্গের কোষগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং টিউমার তৈরি করে। ফলে লিভারের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব পড়ে।

আয়ারল্যান্ডের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী ব্রিটেনের চার লক্ষ ৬৯ হাজার মানুষের চিকিৎসার ইতিহাস খতিয়ে দেখেছেন এই গবেষণায়। ‘ইউনাইটেড ইউরোপিয়ান গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি জার্নাল’ নামের একটি বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশিত সেই গবেষণাতে দেখা গিয়েছে, মুখগহ্বর ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে বেড়ে যেতে পারে যকৃৎ, অগ্ন্যাশয়, কোলন ও মলদ্বারের ক্যানসারের আশঙ্কা। মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, নড়বড়ে দাঁত ও মুখের ঘায়ে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ‘হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা’ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ৭৫ শতাংশ বেশি বলেও দাবি করা হয়েছে ওই গবেষণায়। লিভারে যত ধরনের ক্যানসার হয়, তাঁর মধ্যে হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।

বিজ্ঞানীরা দু’টি সম্ভাব্য কারণের কথা জানিয়েছেন। মুখগহ্বর ঠিকমতো সাফ না হলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। যা বিগড়ে দিতে পারে পেটের ভিতরের মাইক্রোবায়োম। পেটের গোলযোগ বেড়ে গেলে চাপ বাড়ে লিভারের উপর। যা ডেকে আনতে পারে হেপাটাইটিস কিংবা লিভার সিরোসিসের মতো সমস্যা। দাঁতের সমস্যা তৈরি হলে মানুষ ঠিক ভাবে চিবিয়ে খাবার খেতে পারেন না। কেউ কেউ খাবার খাওয়াই কমিয়ে দেন। ফলে খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টিগুণ পাওয়া সম্ভব হয় না। ঠিক মতো পুষ্টিগুণ না পেলে ক্ষতি হয় লিভারের। বেড়ে যায় রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।

চিকিৎসকের মতে, দাঁত এবং মাড়ির যে কোনো সংক্রমণই খুব ভয়ানক। এর থেকে নানা ধরনের শারীরবৃত্তিয় জটিলতা হতে দেখা গেছে। আর রক্তের উপাদানে ভারসাম্য হারালে ইরেক্টাইল ডিসফাংশানসহ আরও বিভিন্ন উপসর্গ হওয়া অসম্ভব নয়। তামাক জাতীয় দ্রব্য যেমন সিগারেট, পাইপ, চুরুট কিংবা পান, জর্দা, খৈইনি, পান মশলা জাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকুন। মদপান থেকেও বিরত থাকুন।

সকালে নাশতা খাওয়ার আগে বা পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে—এই দুই বেলা দাঁত মাজতে হবে দুই থেকে তিন মিনিট ধরে। ওপরের মাড়ির ওপর থেকে নিচের দিকে, নিচের মাড়ির নিচ থেকে ওপরের দিকে। ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। কারণ, এতে অ্যান্টিক্যারিস ও অ্যান্টিহাইপারসেনসিটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট আছে। দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে ফ্লস ও মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। কারণ, এতে দুই দাঁতের সংযোগস্থলে যদি কোনো খাবার জমে তা বের হবে। এগুলো মেনে চললে দাঁতের কোনো রোগই হবে না।


আরও পড়ুন