বিজয়নগরের ২০ গ্রাম প্লাবিত

news paper

প্রবীর চৌধূরী রিপন

প্রকাশিত: ২৩-৬-২০২২ দুপুর ১১:৪০

8Views

তিতাস নদী ও কাজলা বিলের পানি বাড়তে থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৯ ইউনিয়নই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, ৯ ইউনিয়নের ২০ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। 
 
বন্যাকবলিত ইউপিগুলো হলো- চরইসলামপুর, পত্তন, ইছাপুরা, চম্পকনগর, বুধন্তি, চান্দুরা, সিঙ্গারবিল, পাহাড়পুর ও হরষপুর ইউনিয়ন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এসব গ্রামের ফলসি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। তিতাস নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দত্তখোলা, এক্তারপুর, সহদেবপুর, চরইসলামপুর, মনিপুর, পত্তন, গোয়ালখলা, লক্ষ্মীমোড়া, চান্দুরা, কালিসিমা, সাপুটিয়া, নদ্দখলা, পারাঙ্গা, মাশাউরা, সহদেবপুর, খাটিংগা, চম্পকনগরের ভাটি এলাকাসহ উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৬৮৭টি পরিবারের ৩ হাজার ৪৩৫ জন। এসব বানভাসি মানুষের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে তারা দুভোর্গের শিকার হলেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত তারা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাননি।
 
মনিপুর গ্রামের নায়েব মিয়া বলেন, বন্যার পানিতে পরিবার-পরিজন, গরু-বাছুর নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। রান্নাঘর, টিউবওয়েল, বাথরুম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গরু রাখার কোনো জায়গা নেই। অন্য এলাকায় গরু রেখে এসেছি। এভাবে যদি পানি বাড়তে থাকে তাহলে বাড়িছাড়া হতে হবে।
 
উপজেলার চান্দুরা ইউপির কালিসীমা গ্রামের জয়নাল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে খুব অসহায় অবস্থায় আছি। বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। পুকুরের মাছ সব ভেসে গেছে।
 
কালিসীমা গ্রামের আমেনা বেগম নামে এক নারী বলেন, প্রতিদিনই আস্তে আস্তে পানি বাড়ছে। বাড়ির উঠানে কোমর পানি। বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছি না। বাথরুম, রান্নাঘর পানির নিচে। ঘরের ভেতরে কোনোরকম রান্না করে খেয়ে বেঁচে আছি। এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যান কেউ কোনো খোঁজ নেননি।
 
উপজেলার চরইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান দানা মিয়া ভূঁইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাইনি।  
 
উপজেলা কৃষি অফিসার সাব্বির আহমেদ বলেন, বন্যায় ১৩৫ হেক্টর আউশ ধানের জমি ও ৪০ হেক্টরের সবজির জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। হরষপুর ইউনিয়নের ইকতারপুরে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১১টি ঘর পানিতে ডুবে গেছে।
 
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচ ইফরান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বন্যাকবলিত লোকদের জন্য ২৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলার ২০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। ৬৮৭টি পরিবারের ৩ হাজার ৪৩৫ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছি। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।

আরও পড়ুন