একজন মানুষ গড়ার কারিগরের গল্প

news paper

তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ

প্রকাশিত: ২৪-৫-২০২২ দুপুর ১১:৩

39Views

মাদকাসক্তি  আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ। সাড়া পৃথিবী সহ বাংলাদেশেও রয়েছে মাদকাসক্তের প্রভাব।আজ এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়ে আলোচনা করবো যিনি মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে যুবক সমাজে। নাম তার আমির হোসেন আমু ।জন্ম ১৯৭৭ সালের ২৯সে অক্টোবর।পরিবারের চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয় ।ছোটবেলা থেকে দুরন্তপনার মধ্যে দিয়ে তিনি বড়ো হয়েছেন।কিন্তু যুবক বয়সে এসে  অসৎ সঙ্গের প্রভাবে জড়িয়ে কৌতূহলবশত  মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।১৯৯৩ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত মাদকাসক্ত হয়ে অন্ধকারের জগতে সময় পার করেন।এক সময় তিনি উপলব্ধি করতে পারেন মাদকাসক্তি কোনো স্বাভাবিক জীবন না।তার ভিতর ভালো হওয়া এবং সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা সৃস্টি হয় ।পরিবার এর কাছে নিজের সুস্থ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে পরিবার তাকে উত্তরার গোল্ডেন লাইফ নামের একটি মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন ।

সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে বের হয়ে তিনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করা শুরু করলেন ।একদিন হঠাৎ করে তিনি চিন্তা করলেন তার মতো দীর্ঘ বছরের মাদকসেবী যদি সুস্থ্য হয়ে যেতে পারে তাহলে আমাদের সমাজের চারপাশে তো এরকম মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।নিজের ভিতর সমাজের প্রতি দায়িত্ব অনুভব করলেন।খুব কাছের এক  বন্ধু শহীদ খান এর সাথে আলোচনা করে পার্টনার এ ২০০৫ সালে ‘ঘরে ফেরা’ নামে মিরপুর রাইনখোলায় একটি মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করলেন।কেন্দ্র শুরু হয়েছিল মাত্র ছয় জন মাদকাসক্ত রুগী নিয়ে তবে ২০০৫ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২০  থেকে ২২ হাজার মাদকাসক্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন ‘ঘরে ফেরা’ থেকে এবং এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার রুগী সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।আমির হোসেন আমু ২০০৫ থেকে এখন পর্যন্ত দায়িত্বের সাথে ‘ঘরে ফেরা’ মাদকাসক্ত কেন্দ্রের মাদ্ধমে সমাজ সেবা করে আসছেন।'

ঘরে ফেরা’ শুধু একটি মাদকাসক্ত কেন্দ্রই নয়, অন্ধকার জগৎ থেকে বের হওয়ার আলোর পথ।কারণ আমাদের সমাজের একজন মাদকাসক্তের মানে হচ্ছে মায়ের চোখের কান্না আর বাবার দীর্ঘশ্বাস।আমির হোসেন বলেন ,আপনার পরিবারের সন্তান ভুল সঙ্গের প্রভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।কিছু উপসর্গ আছে যা দেখা বোঝা যায় সে হয়তো মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে যেমন (১) সাড়া রাত না ঘুমানো (২) অতিরিক্ত চাহিদা করা (৩) রাগারাগি করা ,ভাঙচুর করা (৪) খাবারে অনিয়ম করা প্রভৃতি যদি এই ধরণের উপসর্গ দীর্ঘদিন বিদ্যমান থাকে তবে দ্রুতই তাকে চিকিৎসার আওয়াতাধীন করতে হবে। আপনি নিশ্চই চাবেন না , যে আপনার সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে মারা যাক।তিনি আরো বলেন আমাদের ‘ঘরে ফেরা’ মূলত  বাহিরের দেশের প্রোগ্রাম অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে থাকে যা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ১৯৮৮ সালে রোনাল ড্রাউজার  সর্বপ্রথম বাংলাদেশে নিয়ে আসে যা ‘N.A’ প্রোগ্রাম নামে পরিচিত।ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে আমির হোসেন আমু বলেন, ক্ষুদ্র পরিসর দিয়ে ‘ঘরে ফেরা’ শুরু করেছিলাম আজ আল্লাহর রহমতে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছি একমাত্র মাদকসেবীদের সুস্থতার পথে আনার জন্য। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এর সহযোগিতা কামনা করছি যাতে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে ‘ঘরে ফেরার’ ব্রাঞ্চ শুরু করতে পারি যাতে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় আর কোনো মাদকাসক্ত না থাকে। 

ঘরে ফেরা মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র: সেকশন -২ ব্লক -এ রোড নং-৪ বাসা নং-৫৫ রাইনখোলা ,চিড়িয়াখানা রোড মিরপুর 2 ঢাকা 1216


আরও পড়ুন