বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, পৌঁছেনি ত্রাণ
প্রকাশিত: ২১-৫-২০২২ দুপুর ১১:৪১
অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার দুটিসহ সেখানে মোট ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছেনি কোনো ত্রাণ। পানিবন্দি মানুষ খাবার, স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন। পানি পুরোপুরিভাবে না নামায় ফিরতে পারছেন না নিজের বাড়িঘরে।
শুক্রবার (২০ মে) বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার হাসননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে সরেজমিন দেখা যায়, এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছেনি। অন্যান্য সুবিধাও নেই। মানুষজন থাকছেন গাদাগাদি করে।
হাসননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে সেখানে আশ্রয় নেয়া গৃহবধূ জাহেরুন বেগম অভিযোগ করেন, ছোট তিনটি সন্তান নিয়ে বুধবার এখানে এসেছেন। আজ পর্যন্ত কেউ খোঁজখবর নেয়নি। চাল নেই। গতকালকাল থেকে না খেয়ে আছি।
মো. ফয়সল মিয়া (৫০) বলেন, আমরা না খেয়ে আছি। কিন্তু কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না। স্ত্রীসহ ৬ সদস্যকে নিয়ে কষ্টে আছি। শুধু আমি নই, এখানে ৩০টি পরিবার আছে। কেউ ত্রাণ বা কোনো সাহায্যই পায়নি।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে গিয়ে দেখা যায়, এখানে ৩৫টি পরিবার খুবই গাদাগাদি করে আছে। তবে যারা নতুন আসছেন তারা কেউই জায়গা পাননি। কষ্ট করে আছেন।
সুলতানপুর থেকে এসেছেন শিল্পী বেগম। তিনি বলেন, আমার পরিবারের চারজন প্রথমে ঘরের মেঝেতে পানি থাকায় খাটে উঠেছিলাম। পানি বাড়ছে দেখে উপায় না পেয়ে গতকাল সকালে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসি। কিন্তু থাকার জায়গা এখনো পাইনি। অন্য রুমগুলোর তালা খুলে দেয়ার কথা বললেও কেউ শুনছে না।
যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে তারা বিশুদ্ধ পানি এবং বাথরুমের সুবিধা পাচ্ছে না কেন- এমন প্রশ্ন করলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরান শাহরিয়ার বলেন, আমি বিষয়টির খোঁজ নিয়ে দেখছি।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগামীকাল সুনামগঞ্জ পৌরসভার মাধ্যমে হাছাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বন্যায় আশ্রয় নেয়াদের ত্রাণ দেয়া হবে।
যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে তারা বিশুদ্ধ পানি এবং বাথরুমের সুবিধা পাচ্ছেন না কেন- এমন প্রশ্ন করলে জেলা প্রশাসক ব্যস্ত বলে ফোন কেটে দেন।