সাপে ঘেরা দ্বীপ, কঙ্কাল ছড়ানো উপত্যকা

news paper

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১-৪-২০২২ দুপুর ৪:২১

7Views

মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যই হলো রহস্যের প্রতি টান। শুধু তা সাহিত্যে নয়, ভ্রমণেও। ভ্রমণ মানেই একটি বড় অংশের মানুষের কাছে অ্যাডভেঞ্চারের নেশা। আর সেই টানেই পৃথিবীর ভয়ঙ্কর সব জায়গার সন্ধানে মানুষ পাড়ি দেয়। 

, ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, আমেরিকা- ক্যালিফোর্নিয়া এবং নেভাডার সীমান্তে অবস্থিত এই উপত্যকা উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে নিচু অঞ্চল। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। বলা ভালো আত্মহত্যা করেছেন। এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ভয়ানক বেশি। 

পৃথিবীর শীতলতম গ্রাম অয়িমিয়াকন। রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এই গ্রামটির তাপমাত্রা কখনো কখনো -৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেও নেমে যায়। যদিও বেশ কয়েকঘর যাযাবর মাঝে মাঝেই আস্তানা গাড়েন এখানে। তবে এই ঠাণ্ডায় মানুষের টিকে থাকা রীতিমতো আশ্চর্যের। আর তাই হয়তো বহু মানুষ শুধু নিজেদের ক্ষমতা পরীক্ষা করতেই প্রতি বছর ভিড় জমান এই গ্রামে।

১৯৮৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সমানে লাভা উদ্গীরণ করে চলেছে হাওয়াই দ্বীপের কিলাউয়া আগ্নেয়গিরি। তরল লাভার উপর দিয়ে নৌকো চালানোর সুযোগও রয়েছে। তবে মৃত্যুর সব আশঙ্কাই রয়েছে। গত ৩৮ বছরে এই নেশায় পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ।

রাজধানী সাও পাওলোর অদূরেই এই দ্বীপ। প্রতিটি সাপই মারাত্মক বিষাক্ত। এই দ্বীপে এক বর্গমিটারের মধ্যে ৫টি করে বিষধর সাপ পাওয়া যায়। এই ভয়ঙ্কর সাপেদের বিষে নাকি মানুষের মাংস পর্যন্ত পুড়ে যায়। সাপের বিষের কালোবাজারি রুখতে বেশ কয়েক দশক ধরেই স্নেক আইল্যান্ডে কারও প্রবেশাধিকার নেই।

১৯৫০ সাল থেকেই রহস্যময় গোলাপি রঙের জন্য সুপরিচিত তাঞ্জানিয়ার রহস্যময় হ্রদ লেক নেট্রন। ২০১৩ সালে এই হ্রদের এক ভয়ঙ্কর বৈশিষ্ট্যের কথা জানা যায়। লেক নেট্রনের জল স্পর্শ করলেই নাকি যে কোনো জীবন্ত প্রাণী পাথর হয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের মতে, বিষয়টা তেমন নয়, জলের ক্ষরতা অনেক বেশি হওয়ার কারণে আসলে জীবিত কোষ পুড়ে যায়।

আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণে এই সমুদ্র উপকূল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মানুষের কঙ্কাল সহ অন্য বিভিন্ন স্তন্যপায়ী পশুর কঙ্কালও। অনেকের ধারণা, বহু প্রাচীন কাল থেকেই আফ্রিকার মানুষ বলি দেওয়ার পর পশুর দেহ ভাসিয়ে দিত সমুদ্রে। আর তাছাড়া আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে জাহাজডুবির ফলে সমুদ্রের স্রোতের সঙ্গে সঙ্গে সেইসব মৃতদেহের কঙ্কাল এসে জমা হয়েছে নামিবিয়ার উপকূলে।

নামের সঙ্গে জায়গাটির চরিত্রের অদ্ভুত মিল। ঠিক যেন অন্ধকারে জ্ব্লছে চুরাশিটা আগুনের কুণ্ড। আর তাও প্রায় ৫০ বছর ধরে। দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা জমার ফলে জায়গাটি মিথেনে ভরে উঠেছিল। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, মিথেন জ্বালিয়ে দিতে পারলেই এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সেই মিথেন গ্যাস এখনও জ্বলছে। বিজ্ঞানীদের কাছে এ এক রহস্য। আর পর্যটকদের কাছে এক বিরল অভিজ্ঞতা।

আন্দামানের নর্থ সেন্টিনাল দ্বীপের আতঙ্ক কিন্তু প্রকৃতি নয়। বরং এখানকার মানুষ। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের বহু উপজাতির সঙ্গেই সভ্য মানুষের যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়েছে। কিন্তু নর্থ সেন্টিনালের দ্বীপের উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষরা কিছুতেই সভ্য মানুষের সংস্পর্শে আসতে চান না। কোনো ভাবে সেখানে সভ্য মানুষ ঢুকে পড়লে, তাদের সেখানেই বিষাক্ত তীরের আঘাতে মৃত্যু বরণ করতে হয়। তবে একসময় বহু মানুষই সেন্টিনালদের মন জয়ের আশা নিয়ে সেখানে পা রেখেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারোর প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার।


আরও পড়ুন