ক্ষেতলালে উন্নত জাতের ধান উৎপাদনে কৃষকের সাফল্য

news paper

এম রাসেল আহমেদ, ক্ষেতলাল

প্রকাশিত: ১৫-৭-২০২৫ দুপুর ১২:৪৬

153Views

জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় এহেড সোস্যাল অর্গানাইজেশন (এসো) কর্তৃক বাস্তবায়িত পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক সহায়তায় ৪০ জন কৃষকের মধ্যে উন্নত জাতের ধানবীজ বিতরণের মাধ্যমে বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা গড়ে তোলার কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় অংশগ্রহণকারী কৃষকদের মাঝে ব্রি ধান-৮৯ ও ব্রি ধান-৯২ জাতের বীজ, রাসায়নিক সার, জৈব সার, কীটনাশক এবং লাইনে চারা রোপণের প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। উন্নত জাত ও বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি পদ্ধতির ফলে কৃষকেরা প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও বিঘা প্রতি ৩৩ থেকে ৪০ মণ ধান উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন।

এসো’র উপপরিচালক মো. মোজাফফর রহমান বলেন, “আমরা এই ৪০ জন কৃষককে বীজ উৎপাদনে দক্ষ করে তুলছি, যাতে ভবিষ্যতে নিজেরাই গুণগত মানসম্পন্ন বীজ সংরক্ষণ ও বিতরণ করতে পারেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে বীজের চাহিদা পূরণ হবে এবং কৃষকের উৎপাদন ব্যয়ও কমবে।” তিনি আরও জানান, এসো উৎপাদিত ধান কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ও উচ্চ মূল্যে সংগ্রহ করছে, যাতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পান ও আর্থিকভাবে লাভবান হন।

উপজেলার তারাকুল গ্রামের কৃষক মো. নাজির হোসেন বলেন, “আমি ব্রি ধান-৯২ জাতের ধান চাষ করেছি। এসো থেকে সব ধরনের সহায়তা পেয়েছি। শতকপ্রতি প্রায় ১ মণ ফলন হয়েছে। এমন ফলন দেখে আমি খুবই আশাবাদী।”

বাঘাপাড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, “আমি ব্রি ধান-৮৯ চাষ করেছি। এই ধান ঝড়ে পড়ে না, ফলনও ভালো। সবচেয়ে বড় কথা—এসো আমাদের কাছ থেকেই ধান কিনে নিচ্ছে। এতে আমাদের লাভ নিশ্চিত হচ্ছে।”

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই উদ্যোগ কৃষকদের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর চাষাবাদের প্রবণতা বাড়িয়েছে, সেই সঙ্গে বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম আরও বড় পরিসরে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আদনান মেহেদী বলেন, “এই প্রকল্প শুধু কৃষকের আয় বৃদ্ধি করছে না, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উন্নত জাতের ধানের বীজ স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনের ফলে কৃষকদের বাজার নির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং সার্বিকভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।”


আরও পড়ুন