ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের হাতে কলেজছাত্র হৃদয় খুন, দুই বন্ধু গ্রেপ্তার
প্রকাশিত: ১৪-৭-২০২৫ বিকাল ৬:১৯
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন (১৯) হত্যার ৮ দিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত অভিযোগে হৃদয়ের ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু কাজল মিয়া (২০) এবং সিরাজুল ইসলাম (২১)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত কাজল মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার কালিয়ারচরের দাড়িয়াকান্দির ফুল মিয়ার পুত্র এবং সিরাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের রাজাপুর এলাকার ইদ্রিস মিয়ার পুত্র। বর্তমানে তারা শ্রীমঙ্গল শহরতলীর শাহীবাগ এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, সিরাজুল পেশায় বাদাম বিক্রেতা ও কাজল পেশায় টমটম চালক।
সোমবার (১৪ জুলাই) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরে ঘটনার বিবরণ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম-সেবা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, হৃদয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে গামছা দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করে। হৃদয় অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত ছিল এবং সে তার বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে জুয়া খেলত। হত্যাকারীরা এতটাই কাছের বন্ধু ছিল যে, তারা মোবাইল ফোন বিক্রি করে হৃদয়কে জুয়া খেলার জন্য টাকা দেয়। ধাপে ধাপে তারা হৃদয়কে মোট ২২ হাজার টাকা ধার দেয়, যা সে আর ফেরত দেয়নি। এছাড়া কিছুদিন আগে হৃদয় তাদের নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিল চাকরি দেবে বলে। কিন্তু চাকরি না দিয়েই সে শ্রীমঙ্গলে চলে আসে। এসব কারণে হৃদয়ের প্রতি তাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই পরিকল্পিতভাবে হৃদয়কে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, খুনিরা প্রযুক্তি সম্পর্কে এতটাই ওয়াকিবহাল ছিল যে তারা কোনো ক্লু রেখে যায়নি। এই ঘটনা উদঘাটনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা রিপোর্টের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই উপজেলার কালীঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা-বাগান থেকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় হৃদয় আহমেদ নামের ওই কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে শহরতলীর শাহীবাগ আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সাথে বসবাস করত। তার পিতার নাম লিটন মিয়া ও মায়ের নাম হাসিনা বেগম। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া এলাকায়।