রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের পুরুষাঙ্গ কর্তন করে পুলিশ হেফাজতে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকার আত্মহত্যা

news paper

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩-৭-২০২৫ দুপুর ৪:৪১

195Views

রাজধানীর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত অপর এক শিক্ষিকা (২৭) পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। নিহত শিক্ষিকা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিহত শিক্ষিকা ভাটারা থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় কীটনাশক পান করায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে পুরুষাঙ্গ কাটা ৪৮ বছর বয়সী ব্যক্তি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি এবং ওই নারী শিক্ষিকা একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।

জানা গেছে, চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষক রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে একটি বাসায় বসবাস করতেন। আর তার স্ত্রী জার্মানিতে থাকেন। কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। তবে তার স্ত্রীর বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর এজন্যই তিনি তার বাবার কাছে হাসপাতালে থাকছেন। তা ছাড়া তার সঙ্গে স্বামীর বনিবনাও হচ্ছিল না। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত ওই শিক্ষিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষকের বাসায় যান। সেখানে তারা রাতে একত্রে থাকেন। আর ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে পরদিন সকালে শিক্ষিকা নিজেই ওই শিক্ষককে রক্তাক্ত অবস্থায় বসুন্ধরা এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।

পরে আহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্বজনরা বিষয়টি জানতে পেরে রাজধানীর ভাটারা থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ সংবাদ পেয়ে গুলশানের এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে ওই নারী শিক্ষিকাকে আটক করে। এ সময় শিক্ষিকা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ‘999’-এ ফোন করে তাকে রক্ষা করার দাবি জানান। এরপর 999 নম্বর থেকে ফোন পেয়ে ভাটারা থানা পুলিশের অপর একটি দল হাসপাতালে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ ওই নারী শিক্ষিকাকে আটক করে ভাটারা থানায় নিয়ে যায়।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাবি জানান, ভাটারা থানা হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই নারী শিক্ষিকা তার নিজস্ব লোকজনের দিয়ে ওষুধ আনার নাম করে কীটনাশক সংগ্রহ করে তা পান করেন। এতে তিনি থানায় থাকা অবস্থায় অচেতন হয়ে যান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধারের পর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তিনি মারা যান।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সকালের সময়কে জানান, আহত শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করানোর আগেই ওই নারীর বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত চলছিল। আর ওই শিক্ষিকার স্বজনেরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষক শিক্ষিকার স্বামী। গত তিন-চার মাস আগে তাদের দুজনের মধ্যে বিয়ে হয়। কিন্তু ওই শিক্ষক অপর এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন। সেই বিষয়টি ওই শিক্ষিকা জানতে পেরে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। পল্লবী থানায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করছেন সহকারী পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী।


আরও পড়ুন