লাকসামে ভারীবর্ষণে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ক্ষতির মুখে মৎস্যচাষিরা

news paper

দেবব্রত পাল বাপ্পী, লাকসাম

প্রকাশিত: ১৩-৭-২০২৫ দুপুর ১২:৫৯

56Views

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় ৪ দিন ধরে চলা ভারী বর্ষণ ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে প্রায় দেড় হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বিভিন্ন কৌশলে ঘের দিয়েও মাছ রক্ষা করা যাচ্ছে না, যার ফলে মৎস্যচাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এছাড়া, পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং অনেক রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এর মধ্যে পৌর এলাকার নিচু অঞ্চলে অবস্থিত কোমারডোoga, ইরুয়াইন, ফতেপুর, ধামৈচা সহ বেশ কয়েকটি পুকুর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল।

উপজেলা মৎস্য সূত্র থেকে জানা যায়, পুরো উপজেলায় ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুরের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার, আর সরকারি খাস পুকুর রয়েছে প্রায় ৫৬টি। গত ৮ জুলাই মঙ্গলবার থেকে ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে এসব পুকুর তলিয়ে যায়। সূত্রটি আরও জানায়, আজগরা গ্রামের শতাধিক পুকুর ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে। আজ ১৩ জুলাই এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার প্রায় দেড় হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের সংখ্যা আরও বাড়বে। এসব পুকুরে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল, যার টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা। এসব পুকুরে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন মাছ এবং প্রায় ১২ লাখ পোনা ছিল বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে লাকসাম পৌরসভার মাছচাষী বেলাল মজুমদার জানান, "আমার বেশ কয়েকটি মাছের বেড়ি আছে। টানা বর্ষণে আমার বেড়ি থেকে অনেক মাছ চলে গেছে। নেট দিয়ে কোনোভাবে ধরে রাখতে পারছি না। আমার প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাকে অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে। কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে এসব পুকুর ভরে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। মাছগুলোর ওজন ছিল দুই থেকে আড়াই কেজি।"

বাকই ইউনিয়ন মাছচাষী দেলোয়ার হোসেন জানান, "আমার ৩৫টি পুকুর আছে, তার মধ্যে ২৫টি ওপরের পুকুর থেকে মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এতে আমার প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধিত হয়ে গেছে। আমার ব্যাংকের ঋণ আছে। এ মাসেই আমার মাছ বিক্রি করার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই সর্বনাশ হয়ে গেছে।"

মৎস্যচাষী খায়ের মিয়া জানান, "টানা ভারী বর্ষণ ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে তার সব বেড়ি প্লাবিত হয়ে মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। কোনো মতেই রক্ষা করা যাচ্ছে না।" খোকন পোদ্দার এখন কী করবেন তা ভেবে চিন্তিত ও হতাশ।

এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলী দৈনিক সকালের সময় প্রতিনিধিকে জানান, "ভারী বর্ষণে কিছু কিছু এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবার জলাবদ্ধতা কোথাও তেমন হয়নি, সে জন্য মৎস্যচাষীদের মাছ তেমন ভেসে যায়নি। মৎস্যচাষীরা যদি উঁচু করে পাড় বাঁধে তাহলে তাদের জন্য ভালো হবে।"


আরও পড়ুন