কর্তৃপক্ষ নীরব
যশোর-খুলনা মহাসড়কে বালুর ড্যাম্পের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা
প্রকাশিত: ১২-৭-২০২৫ বিকাল ৫:১০
যশোর-খুলনা মহাসড়কের একটি অংশের গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা বালুর ড্যাম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি। কর্তৃপক্ষের নীরবতার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, যশোর-খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়া থেকে যশোর পালবাড়ী মোড় পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সংস্কার কাজ ২০১৭ সাল থেকে চলমান। তবে, কয়েক দফা কার্পেটিং দ্বারা সংস্কার কাজ করা হলেও তা টেকেনি। কিছুদিন পর তা নষ্ট হয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়। বর্তমানে এ সড়কের বিভিন্ন অংশে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে সড়কটি প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। কোনো কোনো সময় উল্টে যাচ্ছে যানবাহন। বিশেষ করে আলীপুর থেকে প্রেমবাগ উড়োতলা পর্যন্ত এই অংশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের একাংশের গা ঘেঁষে বালু ব্যবসায়ীদের ৫ থেকে ৬টি বৃহত্তর বালুর ড্যাম্প গড়ে উঠেছে। এই ড্যাম্পের কারণে সড়কে পানি জমে থাকে। পানি জমে থাকায় কার্পেটিং করা সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়। তাছাড়া এসব বালুর ড্যাম্প থেকে বালু নেওয়ার জন্য ট্রাকগুলো দীর্ঘ সময় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় যার ফলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। অপরদিকে প্রচুর পরিমাণ বালু সড়কের ওপর পড়ে থাকে সারা বছর। এই বালু রোদের সময় উড়তে থাকে এবং বৃষ্টির সময় প্যাঁচপ্যাঁচে কাদায় পরিণত হয়ে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটায়। একদিকে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক, অন্যদিকে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।
এদিকে, মংলা-নওয়াপাড়া নৌ বন্দর এবং বেনাপোল-ভোমরা স্থল বন্দরে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্য এই সড়ক দিয়ে পরিবহনের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিশেষ করে নওয়াপাড়া থেকে বিভিন্ন প্রকার সরকারি ও বেসরকারি সার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। চাষাবাদের এখন ভরা মৌসুম চলছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে সরকারি সার সরবরাহ স্থবির হয়ে আছে। ট্রাক চালকরা নওয়াপাড়া থেকে সারসহ সকল পণ্য পরিবহনে অনিহা প্রকাশ করেছে। তাছাড়া এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রায় ১০টি জেলার মানুষ পরিবহনের মাধ্যমে চলাচল করে। সড়কের এমন বেহাল দশার কারণে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা পরিবহনগুলো চুকনগর-মনিরামপুর হয়ে চলাচল করছে। যশোর-খুলনা মহাসড়কের এই দুরবস্থা দীর্ঘ বছরের হলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার অভিযোগ রয়েছে। বালুর ড্যাম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়ক।
এ বিষয়ে জানতে অভয়নগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ প্রতিম শীলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, "আমি বিষয়টি গতকালই দেখে এসেছি। এদের বিরুদ্ধে আইনের মধ্যে থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নেওয়া হবে।"
আরও জানতে এ বিষয়ে, যশোরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানান, "যারা যখন ক্ষমতায় থাকে তারা ক্ষমতার জোরে এই কাজগুলো করছে। তবে এদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"