কেশবপুরে হরিহর নদের পানি বৃদ্ধিতে জলাবদ্ধতা, ইউএনও’র ঘটনাস্থল পরিদর্শন

news paper

সোহেল পারভেজ, কেশবপুর

প্রকাশিত: ১০-৭-২০২৫ দুপুর ২:২৩

42Views

যশোরের কেশবপুরে টানা বৃষ্টি এবং হরিহর নদের পানি বৃদ্ধির কারণে এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে। গত কয়েক ঘণ্টায় হরিহর নদের কেশবপুর অংশে এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। নদের পানি ঢুকে পৌরসভার মধ্যকুল খানপাড়া এলাকার অন্তত ২০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও, খোঁজাখালি খালের সুইস গেটের একটি কপাট ভেঙে গেছে, যার কারণে পানি উজানে ঢুকে কেশবপুর সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের বীজতলাসহ মোট ৩১ হেক্টর ফসল আক্রান্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন সরেজমিনে খোঁজাখালি খালের সুইস গেট এলাকা পরিদর্শন করেন।

ভারী বৃষ্টির কারণে উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ গাজীর বসতঘরের ওপর প্রতিবেশীর একটি বড় রেইনট্রি (শিশু) গাছ উপড়ে পড়ায় বসতঘরটি মাটির সাথে মিশে গেছে। জলাবদ্ধ পৌরসভার মধ্যকুল খানপাড়া এলাকার লিটন শেখ বলেন, "গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও হরিহর নদের পানি ঢুকে এলাকার অন্তত ২০টি পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কষ্ট হলেও পানির ভেতর দিয়েই প্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে। গতবছর পাঁচ থেকে ছয় মাস পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়েছিল। এবার আগেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছি।"

কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা বলেন, কেশবপুরে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে হরিহর নদের ৮ কিলোমিটার অবিলম্বে খনন করতে হবে। তা না হলে কেশবপুর সহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার কিছু এলাকা এবারও বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং গতবারের থেকেও ভয়াবহ অবস্থায় রূপ নিতে পারে বলে মনে হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার জানান, হরিহর নদের কেশবপুর অংশে এক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমায় পৌঁছেছে। জরুরি ভিত্তিতে হরিহর নদের কেশবপুর সদর হতে বড়েঙ্গা পর্যন্ত চার কিলোমিটার এবং আপার ভদ্রা নদী নুরানিয়া পর্যন্ত তিন দশমিক ছয় কিলোমিটার খনন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। খোঁজাখালি খালের সুইস গেটের ভাঙা কপাট বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সম্প্রতি কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে ১২ হেক্টর আমন ধানের বীজতলা, ১৮ হেক্টর পাট ও এক হেক্টর জমিতে সবজি নষ্ট হয়ে গেছে, যার ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কাশিমপুর বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এটি অপসারণ করা হলে পানি সহজে বের হয়ে যেতে পারবে। খোঁজাখালি খালের সুইস গেটের কপাট ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত জিও ব্যাগ দিয়ে ওই স্থান বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে স্থায়ী সমাধান হিসেবে ওই কপাট ঠিক করা হবে। এছাড়াও, জলাবদ্ধতা নিরসনে নদের পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।


আরও পড়ুন