তোপের মুখে সনদ বিতরণে টাকা আদায় বন্ধ করেছে বিদ্যালয়

news paper

আক্কেলপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯-৭-২০২৫ রাত ৮:৫২

418Views

টাকা নেওয়ার বিধান না থাকা সত্ত্বেও কাঙ্খিত টাকা না পেলে প্রশংসাপত্র ও সনদ না দিয়েই শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ফিরিয়ে দিতেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন নাহার মলি। তিনি দাবি করেন প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মেনেই টাকা উত্তোলন করতেন। এই বিষয়ে স্থানীয় ছাত্র জনতার তোপের মুখে পড়ে প্রশংসাপত্র ও সনদ বিতরণে টাকা আদায় বন্ধ করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, গত ৮ জুলাই মোতালেব নামের এক অভিভাবক দুইশত টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন তার মেয়ের এসএসসি পাশ পরীক্ষার সনদপত্রসহ অনান্য (৮ম শ্রেণির) সনদ নিতে। ওই সময় সহকারী শিক্ষিকা মলি তার কাছে পাঁচশত টাকা দাবী করেন। সেই কাঙ্খিত টাকা দিতে না পারায় সনদ দেননি সেই শিক্ষিকা। ঘটনাটি স্থানীয় ছাত্র জনতা জানতে পেরে ওই অভিভাবককে সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই শিক্ষিকার সাথে কথা বলেন। এসময় ছাত জনতার তোপের মুখে পড়েন ওই শিক্ষিকা। এই ঘটনায় একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। এর পর থেকেই বিনামূল্যে প্রশংসাপত্র ও সনদ বিতরণ শুরু করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রশংসাপত্র ও সনদ বিতরণে টাকা আদায়ের কোন বিধান নেই।
ভুক্তভোগী অভিভাবক মোতালেব বলেন, পাঁচশত টাকা দেওয়ার সামর্থ আমার নাই, দুইশত টাকা নিয়ে ওই মেডামের কাছে গিয়েছিলাম। তখন তিনি বলেন, দুইশত টাকা দিলে একটি সনদ পাবেন, পাঁচশত টাকা দিলে তিনটি সনদ পাবেন। টাকা দিতে না পারায় আমাকে সার্টিফিকেট দেয়নি। তখন আমি চলে আসি। পরে ভাইদের (স্থানীয় ছাত্র জনতা) সাথে আসলে আমাকে টাকা ছাড়াই সব দিয়ে দেয়।
রাজেস প্রসাদ নামের একজন জানান, স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সনদের জন্য ঘোরাফেরা করছেন। কথা বলে জানতে পারি টাকা দিতে না পারায় তাদের সনদ দেওয়া হচ্ছেনা। এ বিষয়ে ওই শিক্ষিকা ও প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলা হয়। পরে তাদের বিনামূল্যে সনদ দেয়। জেনেছি এসকল বিষয়ে টাকা নেওয়ার বিধান নেই। বিধান না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। যারা এর সাথে জড়িত তাদের শাস্তি চাই।
সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন নাহার মলি জানান,  প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে রশিদের মাধ্যেমে আমি টাকা উত্তোলন করছি।
প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম সুইটে বলেন, প্রশংসাপত্রের জন্য টাকা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই নেওয়া হয়। যে যার ইচ্ছেমত আদায় করেন। যে টাকা আদায় হয় তা রশিদের মাধ্যমে নেওয়া হয় এবং স্কুল ফান্ডে জমা হয়। গত কালের ঘটনার সময় আমি স্কুলে ছিলাম না। ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে তাকে টাকা ছাড়াই দেওয়া হয়েছে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আর কোন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে টাকা নেওয়া হবে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাবেদ ইকবাল হাসান বলেন, এবিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন অভিভাবক বা শিক্ষার্থীর মাধ্যমে অভিযোগ পাইনি। ঘটনাটি ফেসবুকে দেখেছি। আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করছেন। তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।


আরও পড়ুন