ক্যান্সার আক্রান্ত আবুল কাশেম বাঁচতে চান

news paper

এম,এম হায়দার আলী, তালা

প্রকাশিত: ৯-৭-২০২৫ দুপুর ৩:৪০

92Views

"ভাই, আমি যখন সুস্থ ছিলাম, একটা দিনও বসে খাইনি, জীবনে আমি প্রচুর কষ্ট করেছি। কিন্তু আমার এই ক্যান্সার রোগ হওয়ার পর থেকে কয়েক বছর আমি কোনো কাজকাম করতে পারি না। বরং সুস্থ হওয়ার জন্য বিভিন্ন ডাক্তার-কবিরাজ দেখাতে গিয়ে আমি আজ সর্বস্বান্ত। ভাত-তরকারি কিছুই খেতে পারি না, এক রকম পানি খেয়েই বেঁচে আছি। যা খাই, তাই বমি হয়ে উঠে যায়। নিজের ওষুধ কেনার মতো টাকাও আমার কাছে এখন আর নেই। সংসারের খাওয়া-দাওয়া, দুটো মেয়ে জামাই, আবার দুটো মেয়ে এখনো পড়াশোনা করছে। অভাবের কারণে আমি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমি কারোর কাছে হাত পাততে চাই না, আমি সুস্থ হতে পারলে আবারও কাজকাম করে খেতে চাই।" গতকাল অশ্রুসজল ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্ঠে উপরোক্ত কথাগুলো বলছিলেন লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী আবুল শেখ কাশেম (৬৫)। তার পিতার নাম মৃত শেখ নূর আলী, গ্রাম নোয়াকাটি, উপজেলা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা।

জানা যায়, আবুল কাশেম সুস্থ থাকাকালীন সময়ে ৪ কন্যা সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ভালোই চলছিল তার সুখের সংসার। কিন্তু প্রায় গত দুই বছর আগে মরণব্যাধি ক্যান্সার সকল সুখ-শান্তি ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে, তাকে ঠেলে দিয়েছে মৃত্যুর মুখে। নিজেকে সুস্থ করতে অভিজ্ঞ বিভিন্ন ডাক্তার-কবিরাজ দেখাতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মতো খরচ করে আজ তিনি সর্বস্বান্ত বলে জানান। বর্তমানে অর্থসম্পদ বলতে ভিটেমাটিটুকুই সম্বল। তবুও নেই কোনো সরকারি অনুদান।

সরজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে অসুস্থ পিতাকে দেখতে আসা বড় মেয়ে সেলিনা পারভীন জানান, "আমার আব্বু বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সংলগ্ন একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাচ্ছেন। যা প্রত্যেক সপ্তাহে তিন হাজার টাকার মতো ঔষধ লাগে। যে ঔষধ খেয়েও তেমন কোনো উপকার হচ্ছে না। তার ওপর টাকার অভাবে ঠিকমতো ঔষধ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে আমি কিছু টাকা পয়সা দেই, তাতেই গরিবানামতে সংসারটা চলে।" এ সময় আবুল কাশেমের স্ত্রী রেহেনা বেগম (৫০) দুঃখ করে বলেন, "ডাক্তাররা বলেছেন, ঢাকায় নিয়ে ভালো চিকিৎসা করানো গেলে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও তিনি যতটুকু সুস্থ হবেন, চলাফেরা ও কাজ করতে পারবেন। ডাক্তাররা কেমো দিতে বলেছেন, কিন্তু মোটে না হলেও এক লাখ টাকা জোগাড় না করা পর্যন্ত সেটা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে আল্লাহর ওপর ভরসা করে ফেলে রেখেছি।"

এ বিষয়ে স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম জানান, "আমি তো আগে মেম্বার ছিলাম, একটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলাম। এরপর ৫ তারিখের পরে অর্থাৎ ২২-৯-২০২৪ তারিখে প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। তো আবুল কাশেমের বিষয়টি আমি এতদিন শুনিনি, আপনি যেহেতু বললেন, আমি স্থানীয় মেম্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করব।"

আবুল কাশেমের বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তার সুচিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। তার জীবন বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা একান্ত কাম্য।


আরও পড়ুন