যশোর-খুলনা মহাসড়ক মৃত্যুফাঁদে পরিণত, জনদুর্ভোগ চরমে

news paper

মতিন গাজী, অভয়নগর

প্রকাশিত: ৮-৭-২০২৫ দুপুর ৪:১৭

42Views

যশোরের অভয়নগর উপজেলার যশোর-খুলনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলে কাদা আর রোদ হলে ধুলার কারণে সড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটি পাকা হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি পাকা সড়ক। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে পরিবহন ও ভারী ট্রাক চলাচল করছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করছে। ট্রাকে-ট্রলিতে করে নেওয়া মাটি ও বালি রাস্তার উপরে পড়ে কাদা মাটিতে একাকার হয়ে বেহাল দশার সৃষ্টি করেছে, ফলে সড়কে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে উপজেলার প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুঠিয়া পর্যন্ত সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার জানিয়েছেন, প্রতিনিয়ত দুই-তিনটা গাড়ি আটকে যাচ্ছে। জাহিদুল ইসলাম নামের একজন ড্রাইভার জানান, "গতকাল রাত তিনটার সময় এসেছি, প্রায় ১৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করছি, এখনো পর্যন্ত এই ১ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে পারিনি। আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই, তা না হলে খুব শীঘ্রই সমস্যা আরও তীব্র থেকে তীব্রতা ধারণ করবে।"

এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টির পর থেকে সড়কটি কাদা মাটিতে ভিজে একাকার হয়ে যায়। সড়কের গর্তগুলো পানিতে ভরে যায়। আর বৃষ্টি না হলে গাড়ির চাকার সঙ্গে ধুলা উড়ে। রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকেরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ফলে এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন মোটরসাইকেল ও ছোট ছোট গাড়ির চালকরা। পাকা রাস্তার উপর ভেজা কাদা মাটিতে একাকার হয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক মরণফাঁদ। রাস্তা দিয়ে গাড়িতে চলাচল ও হেঁটে পথ পাড়ি দিতে চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে ইটভাটার মালিক ও মাটি, বালি ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর, ডাম্পার, ট্রলি নিয়মিত মাটি ও বালি বহন করে থাকে। এই ট্রলি থেকে বালি-মাটি পড়ে রাস্তার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়। এই মাটি রোদের সময় ধুলা আর বৃষ্টির সময় পিচ্ছিল কাদায় পরিণত হয়। বৃষ্টি হওয়াতে পাকা সড়কে কাদা হয়ে পড়েছে। মেহেদি নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, "বৃষ্টি হলে কাদা, অন্যদিকে রোদ উঠলে ধুলা। ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করতে হয়। ধুলায় কোনো কিছুই দেখা যায় না। আবার বর্তমানে কাদার কারণে রাস্তাটা পর্যন্ত পার হতে পারছি না, চলাচলে অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।" পরিবহন চালক রমজান আলী বলেন, "বছর জুড়েই এই রাস্তায় চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্ষা হলেই চলাচল করতে দুর্ভোগ বাড়ে, আবার বর্ষা গেলে ধুলায় টিকে থাকা দায় হয়ে পড়ে। বর্তমানে চলাচলে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, প্রতিনিয়তই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।"

এ ব্যাপারে যশোরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ "সকালের সময়কে" বলেন, "গতকাল রাস্তার কন্টাক্টরকে ডাকা হয়েছিল, তাদের সাথে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করব। ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হলেও আজ দুপুরের পর থেকেই কাজ শুরু হবে এবং আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।"

এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, "হাইওয়ে পুলিশের টিম ২৪ ঘণ্টা মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমানোর ক্ষেত্রে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। এছাড়াও মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে।"


আরও পড়ুন