সোনারগাঁয়ে বহুরুপি মাসুম রানার কারনে বির্তকিত বিএনপি

news paper

আনোয়ার হোসেন, সোনারগাঁও

প্রকাশিত: ১৪-৬-২০২৫ দুপুর ১:৪৯

12Views

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বহুরুপি মাসুম রানার কারনে বির্তকিত হয়ে পড়েছে উপজেলা ও পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন নানা ঘাটের জল খেয়ে, গত বছরের ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর, এখন আবার সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতার আনুকুল্ল পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মাসুম রানা। সোনারগাঁবাসীর প্রশ্ন এখন আসলে মাসুম রানা তুমি কার? সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতার আনুকুল্ল পেতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মঞ্চে মাসুম রানা সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করলে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে থলের বিড়াল। বিগত আওয়ামী সরকার আমলে ওয়াজ মাহফিলের বিভিন্ন মঞ্চে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ব্যানারে হাত পাখা মার্কায় ভোট চেয়ে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে ছিলেন। এছাড়া তিনি বিগত সময় উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন শীর্ষ নেতা ও পিরোজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের সঙ্গে সখ্যতা রেখে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করেন। এখন তাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে চলছে মানুষের নানাবিধ কটুক্তি। পাশাপাশি পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরাও বিভিন্ন সময় তাকে কটাক্ষ করে বক্তব্যের মাধ্যমে জানতে চাচ্ছেন কে এই মাসুম রানা? সম্প্রতি মাসুম রানার বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকান্ডে অস্বস্তিতে রয়েছেন পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। 
উপজেলা ও পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাসুম রানা উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। ব্যক্তি জীবনে উচ্চতর কোন শিক্ষা যোগ্যতা না থাকলেও চাটুকারিতা ও মানুষের সঙ্গে প্রতারনার করে কিভাবে ভিত্তভৈববের মালিক হওয়া যায় সে বিষয়ে অনেক পারদর্শী তিনি। বিগত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর এস আলম গ্রুপের সঙ্গে প্রতারনা করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এখন আবার সাধ জেগেছে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হয়ে মেঘনা শিল্পাঞ্চল এলাকার অধিপতি হওয়ার। সে লক্ষ্যে আওয়ামী সরকারের পতনের পর সুযোগ বুঝে বিএনপি ব্যানারে পিরোজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করছেন তিনি। যার ফলে বিব্ররতকর অবস্থায় রয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। অপর দিকে, পিরোজপুর ইউনিয়নের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সাবেক সফল চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম নীরবে পর্যবেক্ষন করছেন মাসুম রানার কার্যকলাপ। পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, মাসুম রানা বর্তমান সময়ে পিরোজপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বিতকির্ত একজন ব্যক্তি। প্রাতিষ্ঠানিক কোন উচ্চতর শিক্ষা যোগ্যতা না থাকলেও বিগত আওয়ামী সরকার আমলে অবৈধ বালুর ব্যবসা করে বনে যান কোটিপতি। সম্প্রতি বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মীকে অনৈতিক সুবিধা প্রদান করে বাগিয়ে নিয়েছেন ওয়ার্ড যুবদল নেতার পদবী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা জানান, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুম রানা বর্তমান সময়ে বিভিন্ন মঞ্চে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের চাটুকারিতায় লিপ্ত থাকায় মান্নানের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হয়েছে অনেক নেতাকর্মীর। উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা আরো বলেন, মাসুম রানা একজন পল্টিবাজ সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি। সে আওয়ামী সরকার আমলে নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনের সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও জাতীয় পার্টীর সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকার সঙ্গে সখ্যতা রেখে তার ব্যবসা বানিজ্য ঠিকমত পরিচালনা করেন। পাশাপাশি পিরোজপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের মঞ্চে প্রধান অতিথি হয়ে খেলাফত মজলিসের পক্ষে হাত পাখার প্রচার প্রচারনায় সক্রিয় ছিলেন। গত ৫ আগস্টে আওয়ামী সরকারের পতনের পর আবার মাসুম রানা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচীতে দেখা যাচ্ছে। মাসুম রানার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আজহারুল ইসলাম বিএনপি কর্মীসমর্থকদের কাছে এখন চক্ষুসুল অবস্থায় পরিনত হয়েছেন। গত ২৩ মে বৃহস্পতিবার বিএনপির কর্মী সম্মেলনের প্রস্তুতি সভায় মান্নানের আপন মামাতো ভাই ও পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান তার বক্ত্যবে বলেছেন, মাসুম রানা বিএনপির কেউ না। তাকে যদি দলীয়ভাবে কেউ একক সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী করতে চায়, তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে আবারো বিজয়ী করতে এক সাথে মাঠে কাজ করব।
তুমুল বির্তকিত ব্যক্তি মাসুম রানা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, মাসুম রানা উপজেলা বিএনপির কেউ নয়। গত ১৭ বছর উপজেলা বিএনপির যে ত্যাগী নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেছে সে তালিকায় মাসুম রানা নাই। তাকে আমরা পাখা মার্কা এবং লিয়াকত হোসেন খোকার সঙ্গে দেখেছি। তবে, মাসুম রানাকে মৌন সমর্থনের বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওপর অনেক নেতাকর্মীর অভিমান-অনুযোগ রয়েছে এটা সত্যি। যা থেকে তিনি সরে আসবেন বলেই আমার বিশ্বাস। 
 


আরও পড়ুন